বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বাংলাদেশেও এর ভয়াবহতা দেখছে। অক্সিজেনের সংকটে মৃত্যু মুখে পতিত হয়েছে মানুষ। এমন একটি পরিস্থিতিতে মাঠে নামে ‘জয় বাংলা অক্সিজেন সেবা’। সারাদেশে এ পর্যন্ত ঘরে থেকে অক্সিজেন সেবা পেয়েছেন ১ হাজার ৯২৫ জন কভিড ও নন কভিড রোগী।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডাকসুর সদ্য সাবেক স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী এ কাজের প্রধান উদ্যোক্তা। সাথে যোগ হন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক সবুর খান কলিন্স ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক সদস্য রফিকুল ইসলাম সবুজ।
সাদ বিন কাদের বলেন, করোনার শুরু হতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে নিম্নআয়ের মানুষকে খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু অক্সিজেন সংকটে পড়েছেন ধনী গরীব সবাই।
তিনি বলেন, চলতি বছরের ২৫ জুন থেকে এই সেবা কার্যক্রম শুরু করি। শুরুতে ঢাকা ভিত্তিক হলেও পর্যায়ক্রমে দেশের বিভিন্ন জেলায় এ সেবা চালু করা হয়। সাদ জানান, ৮০জন স্বেচ্ছাসেবক এ কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত করেছে।
সাদ জানান, ঢাকা, সাভার, নারায়ণগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, মাওয়া, টঙ্গী এবং তুরাগ থানায় ১ হাজার ৬২১জন রোগীকে অক্সিজেন সেবা দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগে ১২৭ জন তবে এর মধ্যে ফেনীতে ৩৫জন এ সেবা পেয়েছেন। ময়মনসিংহ বিভাগে ১০৫ জয় বাংলা অক্সিজেন সেবা পেয়েছে। এছাড়া কুরিয়ার সার্ভিস এবং গাড়িতে রোগী বহনে ৭২ জন সেবা পেয়েছেন।
ফেনীতে দায়িত্বরত স্বেচ্ছাসেবক দেলোয়ার হোসাইন শুভ জানান, ৯জন স্বেচ্ছাসেবক ফেনীতে রোগীদের ঘরে অক্সিজেন সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছে।
নিকট আত্মীয়ের জন্য জয় বাংলা অক্সিজেন সেবা পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ফয়েজ উল্যাহ। তিনি বলেন, সাদের এমন উদ্যোগ অনেকের মনে আশার সঞ্চার করেছে।
উল্লেখ্য, সাদ বিন কাদের চৌধুরী করোনাকালে সুবিধা বঞ্চিত মানুষের খাদ্য সহায়তায় কাজ করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, লকডাউনের পুরোটা সময় শিক্ষার্থী এবং শ্রমজীবী মানুষের বাসায় ভালবাসার উপহার স্বরূপ খাদ্যসামগ্রী পাঠানো হয়েছে। পরশুরামে গ্রামের বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত বিনামূল্যে সবজি বিতরণ করা হয়। গ্রামের অস্বচ্ছল মানুষের জন্য বিনামূল্যে অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প দেয়া হয়। সেখান থেকে বিনামূল্যে ঔষধ এবং চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা করা হয়। এই কার্যক্রম প্রায় ৪ মাস ধরে চালু ছিল।
জয় বাংলা অক্সিজেন সেবা প্রসঙ্গে সাদ আরও বলেন, বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবার কাজটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। আমরা তিনজন উদ্যোক্তার পারিবারিক আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এই কার্যক্রমে এগিয়ে আসে। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা আর্থিক বিবরণীর সম্পূর্ণ হিসেব দিয়েছি। আমরা চেষ্টা করি প্রতিমাসে একবার করে হিসাব দিয়ে যেতে।