৯ নভেম্বর,২০১৯

।।ডেস্ক রিপোর্ট।।
মহাদূর্যোগের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে বাংলাদেশ। গত ২৪ ঘন্টায় ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ ক্রমশ উত্তর এবং উত্তর-পূর্বে দ্রুত গতিশীল থেকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিনত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিঃমিঃ এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৩০ কিঃমিঃ যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার ঝাপ্টা আকারে ১৫০ কিঃমিঃ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে।


আবহাওয়া অফিস জানায়, ঝড়টি প্রায় ভারতীয় উপকূল ঘেঁষে অগ্রসর হচ্ছে। আজকের মধ্যে পশ্চিম বাংলার উপকূলবর্তী স্থানে আংশিক স্পর্শ করে সাতক্ষীরা জেলার উপকূলবর্তী বা খুলনা-বরিশাল বিভাগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে।


ঝড়টি প্রায় সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত করতে যাচ্ছে। আঘাতের সময় ঝড়ের শক্তি তেমন একটা কমার সম্ভাবনা পাওয়া যায়নি।


ভারতের পশ্চিমবাংলার মধ্যে ঝড়ের তুলনায় বৃষ্টিপাত বেশী থাকবে কিন্তু বাংলাদেশের মধ্যে ঝড় এবং বৃষ্টি উভয়ই বেশী হবে।


ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে দেশের আকাশে মেঘের উপস্থিতি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং টানা গুড়ি গুড়ি, হাল্কা ও মাঝারি বৃষ্টি চালু আছে বিভিন্ন স্থানে। দক্ষিণাঞ্চল বা খুলনা, বরিশাল ও চট্রগ্রাম বিভাগের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণীর বৃষ্টির সাথে ভারী বৃষ্টি হতে দেখাগেছে বিভিন্ন সময়ে।


ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের নিকটবর্তী হওয়ার সাথে সাথে উপকূলে দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার তীব্রতা বৃদ্ধি পেতে থাকবে। প্রবল বৃষ্টিপাত, তীব্র ঝড়ো হাওয়া এবং ৭/১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে উপকূলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।


ঝড়টি খুবই শক্তিশালী হওয়ায় এবং প্রচুর পরিমাণে মেঘের উপস্থিতি থাকায় সমগ্র বাংলাদেশেই প্রভাব পড়বে।


দেশের প্রায় সকল স্থানে কম-বেশি বিভিন্ন শ্রেণীর বৃষ্টি থাকবে। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ঝড়টি অতিক্রমের সময় ঝড়ের নিকটবর্তী জেলাগুলোতে মাঝারি বা শক্তিশালী দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার প্রভাব দেখা যাবে।


ঝড়টি উপকূলে আঘাত হানার পর থেকে ক্রমশ দুর্বল হতে থাকবে বিধায় দেশের মধ্যভাগে ক্ষয়ক্ষতি বেশ কম হবে তবে উপকূলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। বেশ কয়েকবছর পর শক্তিশালী একটি ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে আঘাত হানতে যাচ্ছে।


চট্টগ্রাম বিভাগের সর্ব দক্ষিণের জেলাগুলোর মধ্যে প্রভাব তুলনামূলক কম থাকবে যদিও ঝড়টির শেষ মূহুর্তের অবস্থান ও শক্তির উপর ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান নির্ভর করছে।


আজ শনিবার (৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ৯ টায় ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র থেকে নিকটতম ভারতীয় উপকূলের দূরত্ব: ১০০ কিঃমিঃ। বাংলাদেশের কুয়াকাটা থেকে দূরত্ব: ২৯৫ কিঃমিঃ।


মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর সমূহকে ১০ নংমহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এই সংকেতের আওতায় রয়েছে ভোলা, বরগুনা,পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি,বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, জেলাসমূহ এবং এই সমস্ত এলাকার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ।

চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৯ নং মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এই সংকেতের আওতায় রয়েছে উপকূলিয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং এই সমস্ত এলাকার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ। কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরের ক্ষেত্রে ৪ নং হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।