তাদের ডাকাতির ধরনটা ছিল ভিন্ন। তাদের মধ্যে একজন সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও অন্যজন ব্যাটারিচালিত টমটম চালিয়ে ফেনীর বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির করার স্থান খুঁজে বের করত। এরপর ডাকাত সর্দার তার লোকজন নিয়ে চিহ্নিত ঘরের রান্নাঘরে সুকৌশলে ঢুকে লবণ, পানি, মরিচ বা হলুদের গুড়া বা চিনির মধ্যে মেশাত চেতনানাশক ঔষধ। তারপর বাড়ির সদস্যরা চেতাননাশকের প্রভাবে অজ্ঞান হয়ে গেলে, শুরু হত তাদের লুটপাট কার্যক্রম। বাধা আসলে তা প্রতিহত করার জন্য তাদের সঙ্গে থাকত আগ্নেয়াস্ত্র ও ছোরাসহ বিভিন্ন ডাকাতির সরঞ্জাম। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ডাকাতির এমন অভিনব বিবরণ দিলেন পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী।


বৃহস্পতিবার (৩০) জানুয়ারি ভোর পৌনে ৪ টার দিকে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ আন্তঃজেলা এ ডাকাত চক্রের মুলহোতা মিন্টুসহ ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।


পুলিশ সুপার জানান, ফেনীর বিভিন্ন এলাকায় বিগত কয়েক মাস ধরে গৃহের লোকজনকে অচেতন করে ডাকাতি করে মালামাল লুট করছে একটি চক্র। তাদের গ্রেফতারে উঠেপড়ে লাগে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। এ চক্রের খবর পেয়ে আজ ভোর রাতে ফেনী সদরের কাজীরবাগের রুহিতিয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে মুলহোতাসহ ৪ আন্তঃজেলা ডাকাত ও অজ্ঞান পার্টির ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি সিএনজি অটোরিকশা, ১টি দেশীয় তৈরি এলজি, ২ রাউন্ড কার্তুজ, ৩টি ছোরা, ২শ গ্রাম চেতনানাশক ঔষধ, ২টি চর্ট লাইট, ২টি মুখোশ, ১ গুচ্ছ চাবি, ২টি তালা ও দরজা ভাঙ্গার রড, ২টি স্ক্রু ড্রাইভার ও ৩টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এছাড়া অভিযান টের পেয়ে আরও একটি সিএনজি অটোরিকশাসহ ৪/৫জন ডাকাত পালিয়ে যায়।


সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) রবিউল ইসলাম, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (ডিএসবি) খালেদ হোসেনসহ গোয়েন্দা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনজিতু কুমার বড়ুয়া জানান, গ্রেফতারকতৃদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতার ডাকাতরা হল নোয়াখালীর সোনাইমুড়ির পূর্ব নাটেশ্বরের মোঃ সামছুল হকের ছেলে মোঃ মিন্টু (৪৮), খুলনার বাগেরহাটেরর রামপালের মৃত ইব্রাহিম শেখের ছেলে সালাম শেখ (৪৭), নোয়াখালীর সুধারাম থানার ধর্মপুরের মৃত মোস্তফার ছেলে মোঃ মোশাররফ হোসেন (৩৬) ও একই এলাকার জামালপুরের মৃত আলী আহাম্মদের ছেলে মোঃ আবদুল (৫০)।


রনজিত কুমার বড়ুয়া জানান, তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন, অজ্ঞান করে লুটপাট ও ডাকাতি প্রস্তুুতির দুইটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হবে।