২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ।। ফেনী ডেস্ক।।
শীতজনিত হালকা রোগেই ওষুধ ও এন্টিবায়োটিক সেবন নিয়ে সতর্ক করেছেন প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন একুশে পদক বিজয়ী অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘শীতজনিত রোগে কোনক্রমেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো যাবে না। খেলেই মারাত্মক বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।’

 

রাজধানীসহ সারাদেশে শীতের প্রকোপে শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগ বৃদ্ধি ও করণীয় বিষয়ে শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) এসব কথা বলেন তিনি।


এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, জ্বর-সর্দি হলে হলে চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে। বড়রা জ্বর বা শরীরের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলেই প্যারাসিটামল খাবে। আবার ৩ দিনের বেশি জ্বর থাকলে ডাক্তারের কাছে যাবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াই যাবে না। এতে লিভারের সমস্যা ছাড়াও সঠিক ওষুধ ও সঠিক মাত্রায় না খাওয়ার কারণে ওষুধ রেজিস্ট্যান্ট হতে পারে। ফলে পরবর্তীতে আর ওষুধ কাজ নাও করতে পারে।


তিনি বলেন, বাংলাদেশে শীতকালীন স্বাভাবিক তাপমাত্রায় বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধি দেখা দেয়। এর মধ্যে সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, হাঁপানি, টনসিলাটাইসিস, ব্রংকিওলাইটিস, সাইনোসাইটিস, বাত, আর্থ্রাইটিস, চামড়ার শুষ্কতা অন্যতম। এসব রোগ থেকে সুরক্ষায় শীত এড়িয়ে চলতে হবে। বিশেষ করে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া যাবে না।


ঠাণ্ডাজনিত রোগে শিশুরা বেশি ঝুঁকিতে থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সময়ে শিশুদের সর্দি-কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। শিশুদের পাশাপাশি বয়স্কদের ক্ষেত্রেও বেশকিছু সমস্যা দেখা দেয়। তীব্র শীতে বয়স্কদের ক্ষেত্রে হাইপোথার্মিয়া হতে পারে। একটু বয়স বেড়ে গেলে এই ব্যথা বেড়ে যায়। অনেকে এ সময় আর্থ্রারাইটিস ও অস্থিসন্ধির ব্যথায় খুবই কষ্ট পান।


ডা. আবদুল্লাহ বলেন, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এমনিতেই মানুষের শরীরের তাপ উৎপাদন ক্ষমতা কমতে থাকে। এক্ষেত্রে রোগীর শরীর ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা হয়ে আসে। শরীরে তাপ উৎপাদন কম হওয়ায় হাত-পা কুঁকড়ে যায়। এমনকি শরীর অবশ হয়ে আসতে থাকে। এছাড়া হাঁপানি, ডায়রিয়া, সর্দি-কাশিসহ অন্যান্য রোগ তো আছেই। এসব রোগ থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই শীত এড়িয়ে চলতে হবে।


তিনি আরও বলেন, শরীর গরম রাখতে গরম পোশাক পরতে হবে, গরম পানি খেতে হবে। এমনকি গোসলের ক্ষেত্রে গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। যেহেতু এসব রোগে বয়স্ক ও শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে তাই তাদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। রুম গরম রাখতে রুম হিটার ব্যবহার করা যেতে পারে। তাছাড়া রোগে আক্রান্ত হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।


আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানায়, উচ্চ চাপ বলয় ও উত্তর-পশ্চিমা শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহ (জেড বায়ু) বেশি সক্রিয় থাকায় এবং কুয়াশা ও জলীয় বাষ্পে আর্দ্রতা বেশি হওয়ায় শীতও তীব্র অনুভূত হচ্ছে। এ সময় কুয়াশাস্তর নিচে নেমে আসায় মেঘলা আবহাওয়াও বিরাজ করছে। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহ থাকবে আরো অন্তত দুই দিন।

সূত্রঃ https://medivoicebd.com/