২৭ নভেম্বর, ২০১৯ ।। সোনাগাজী সংবাদদাতা ।।


সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে জেঠাতো ভাই পরিচয় দিয়ে ১৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সোনাগাজীর আবুল কাশেম ওরফে চীনা কাশেম নামে এক প্রতারক। সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের চরসাহাভিকারী গ্রামের পরেশ চন্দ্র মজুমদার ও তার আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে প্রতারণা করে এ টাকা হাতিয়ে নেয় চীনা কাশেম ও তার সহযোগিরা।


এ বিষয়ে সপ্তাহখানিক আগে প্রতারণার শিকার পরেশ চন্দ্র মজুমদার বাদী হয়ে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও আমলি আদালতে চীনা কাশেম ও তার সহযোগীদের আসামি করে মামলা করেছেন। মামলায় অন্য আসামিরা হলেন চীনা কাশেমের স্ত্রী ছেমনা খাতুন, তার ছেলে আরাফাত ও বগাদানা গ্রামের শাহজাহান।


বাদীর আইনজীবী কামরুজ্জামান স্বপন জানান, আদালত মামলা আমলে নিয়ে সোনাগাজীর ইউএনওকে আগামী ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন।


সোনাগাজীর ইউএনওর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আদালতের আদেশ পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হয়েছে।

বাদী তার মামলায় উল্লেখ করেন, তার মেয়ে চরসাহাভিকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়ার কাজ করে জানতে পেরে আসামি আবুল কাশেম তাকে বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার জেঠাতো ভাই। ১৬ লাখ টাকা দিলে তদবির করে তোমার মেয়েকে সরকারি প্রাইমারি স্কুলের দপ্তরির চাকরি পাইয়ে দেব। তার কথা বিশ্বাস করে তিনি তার আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা ধার করে চীনা কাশেমকে দেন।

টাকা দেওয়ার কিছু দিন পর ২০১৮ সালের ২ জানুয়ারি চাকরির কী ব্যবস্থা হলো জানতে চাইলে চীনা কাশেম প্রধানমন্ত্রীর সিলযুক্ত কিছু কাগজ তাকে দিয়ে বলেন, বাকি টাকা কিছু দিনের মধ্যে দিলে চাকরি হয়ে যাবে। তখন ব্যবস্থা করতে না পেরে তিনি বাকি টাকা চাকরি হলে দেওয়ার অঙ্গীকার করে ৫০ টাকার ননজুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দেন। পরে চলতি বছরের ২৬ অক্টোবর তিনি চীনা কাশেমের বাড়িতে গিয়ে টাকা ও স্ট্যাম্প ফেরত দেওয়ার কথা বললে কাশেম ও তার সহযোগীরা তাকে হত্যার হুমকি দেয় এবং মামলায় জড়ানোর ভয় দেখায়।


অভিযোগের বিষয়ে জানতে চীনা কাশেমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতিবেদককে তার বাড়িতে যেতে বলেন। পরে বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, চীনা কাশেমের বসতঘরের দরজায় তালা ঝুলছে। তার মেয়ের দেখা পেলেও তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। আবারও চীনা কাশেমের মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।


সোনাগাজীর ইউএনও অজিত দেব বলেন, আদালতের আদেশ পেয়েছি। তদন্ত করে যথাসময়ে প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হবে।

সূত্রঃ দৈনিক সমকাল