ফেনীতে সচেতনতা ও যথাযথ প্রচারণার ফলে স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা আগের তুলনায় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) মোঃ সালেহ উদ্দিন পাটোয়ারী এমন দাবী করে জানান, বর্তমানে জেলার রক্তের চাহিদার প্রায় ৮০ শতাংশ আসে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হতে। বাকী ২০ শতাংশ আসে আত্মীয় ও পেশাদার রক্তদাতাদের কাছ থেকে।

রামিম (১৪) নামে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এক শিশুর অভিভাবক বলেন, আমার সন্তানকে প্রতিমাসে কমপক্ষে তিনবার রক্ত দেয়ার জন্য ডাক্তাররা বলেছেন। এখন সময়মত দিতে পারলেও ২ বছর আগে কিন্তু রক্তের অভাবে অনেক সময় মাসে একবারও দিতে পারিনি।

আমরা ক’জন স্বেচ্ছাসেবক ফেনী’র সভাপতি সাহাব উদ্দিন বলেন, ফেনীতে প্রায় ১৫ থেকে ২০টি সংগঠন নিয়মিতভাবে রক্তদানে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি জানান, স্বেচ্ছায় রক্তদানে তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। প্রচারণা ও সচেতনতা বৃদ্ধি পেলে ফেনীতে রক্তের সংকট সৃষ্টি হবে না।

স্বেচ্ছায় রক্তদাতা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, একজন মানুষের জীবন বাঁচানো অনেক মহৎ কাজ। এতে মনের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করে।

রক্তদাতা সাব্বির আহমেদ বলেন, রক্তদান ধর্মীয় দিক থেকেও পূণ্যের কাজ। একজন মানুষের জীবন বাঁচানো মহৎ কাজ।

সরকারি নিবন্ধনকৃত স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতা সংগঠন ফ্রেন্ডস ইউনিটি ব্লাড ডোনার ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নাহিদ হায়দার বলেন, আমাদের সংগঠন থেকে গত তিনমাসে স্বেচ্ছায় ৩০৬ ব্যাগ রক্তদান করা হয়েছে। আমাদের সদস্য সংখ্যা দুই শতাধিক। এর বাইরেও আমরা বিভিন্ন রক্তদাতার কাছ হতে রক্ত সংগ্রহ করে থাকি।

রক্তদাতা সংগ্রহের বিষয়ে ‘রক্ত কণিকা ফেনী’র সভাপতি খোন্দকার সুমন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বর্তমানে রক্তের প্রয়োজনের বিষয়টি আলোচিত হলেও স্বেচ্ছাসেবকদের নিজস্ব সম্পর্কে রক্তদাতা সংগ্রহ বেশি হচ্ছে। গত তিনমাসে তাদের সংগঠনের ৫৭৯ ব্যাগ রক্ত প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে জেলায় আমাদের ৪০জন স্বেচ্ছাসেবক থাকলেও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতি মাসে শতাধিক রোগীর জন্য রক্তের যোগান দিয়ে আসছি।

জয়নাল আবেদিন ব্লাড ব্যাংক ফেনীর রক্ত সঞ্চালনে দায়িত্বরত টেকনোলজিস্ট তুষার দেবনাথ বলেন, অনেকে রক্তদানে ভয় পান। কেউ কেউ ভাবেন এতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে। এগুলো সম্পূর্ণ অমূলক।

পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, যে কোন সুস্থ-সবল মানুষ রক্তদান করলে রক্তদাতার স্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি হয় না। এমনিতেই রক্তের লোহিত কণিকাগুলো স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ৪ মাস পরপর নষ্ট হয়ে যায় বা ভেঙ্গে যায় বা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।