বাউল সম্রাট লালন শাহ'র ১৩০তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে ফেনীতে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ও জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সভাপতি মোঃ ওয়াহিদুজজামান। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা শিল্পকলা একাডেমী।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, জাত-ধর্মের চেয়ে মানবধর্ম ছিল লালনের কাছে সবচেয়ে বড়। তাই তিনি কখনও নিজে কোন ধর্মীয় আদর্শের অনুসারী তা প্রকাশ করেনি। তিনি বলেন, লালন ছিলেন একজন অক্ষর জ্ঞানহীন মানুষ। তবু তিনি তার আধ্যাত্মিক চিন্তা দিয়ে যা বলে গেছেন, তা বর্তমানে অনেকে গবেষণা করেও বলতে পারবেন না।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, একজন অক্ষর জ্ঞানহীন মানুষ আমাদের চিন্তা চেতনার অনেক খোরাক দিয়েছেন। লালন কত গান আমাদের উপহার দিয়েছেন। যার মধ্যে বিবিসির জরিপে শ্রেষ্ঠ ২০টি গানের মধ্যে লালন শাহ’র গানও স্থান পেয়েছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম জাকারিয়া বলেন, সবাই যার যার ধর্মকে শ্রেষ্ঠ মনে করে ধর্ম পালন করে। কিন্তু লালন শাহ জাত ধর্ম থেকে মানবধর্মের প্রতি সবসময় গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি সবাইকে লালন শাহ'র জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে সর্বদা মানুষকে সম্মান করার আহবান জানান।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোছাঃ সুমনী আক্তারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন ফেনী সরকারি কলেজে ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ মোস্তাক হোসাইন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ফেনী জেলার সহ-সভাপতি জাহেদ হোসেন বাবলু, জেলা কালচারাল অফিসার জান্নাত আরা যুথি। সভায় লালন শাহ’র জীবনী নিয়ে প্রবন্ধ পাঠ করেন এডভোকেট সাইফুল্ল্যাহ শাহীন। প্রবন্ধ নিয়ে আলোচনা করেন সাংবাদিক ও কবি শাবিহ মাহমুদ।

আবৃত্তিকার এম.এফ রহমান মিলনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ফেনী জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারাসহ ফেনীর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভা শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।