স্বাস্থ্যসেবায় বিশেষ অবদান রাখায় দেশের শ্রেষ্ঠ পাঁচটি জেলার মধ্যে অন্যতম জেলা হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে ফেনী স্বাস্থ্য বিভাগ। দেশের মধ্যে সর্বোচ্চসংখ্যক ৩টি ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাতীয় পুরস্কার-২০১৯’ পেয়েছে ফেনীর সিভিল সার্জন অফিস, দাগনভূঞা ও সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

আজ বৃহস্পতিবার ( ৮ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক’র কাছ হতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মীর মোবারক হোসাইন, দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রুবাইয়েত বিন করিম, সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ উৎপল দাশ পুরস্কার ও সম্মাননা গ্রহণ করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্যসেবায় অনন্য অবদান রাখায় দেশের পাঁচটি সিভিল সার্জন অফিসের মধ্যে অন্যতম হিসেবে পুরস্কৃত হয় ফেনী সিভিল সার্জন অফিস। অন্যদিকে ‘কমিউনিটি হেলথ সার্ভিস’ ক্যাটাগরিতে সারা দেশে শীর্ষ দশটি উপজেলার মধ্যে অন্যতম উপজেলা হিসেবে পুরস্কার পায় দাগনভূঞা স্বাস্থ্য বিভাগ। আর চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ উপজেলা হিসেবে নির্বাচিত ও পুরস্কৃত হয় সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করছেন দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রুবাইয়েত বিন করিম

এ সাফল্যে জেলার সকল স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, স্বাস্থ্যকর্মী, স্বাস্থ্য সহকারিসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।

পুরস্কার প্রাপ্তির বিষয়ে ডাঃ মীর মোবারক হোসাইন হোসেন বলেন, দেশের সব পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে স্বাস্থ্যসেবার সার্বিক মানোন্নয়ন, স্বাস্থ্যব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ ও মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা প্রসারে ভূমিকা রাখার জন্য জেলার ৩টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান এ পুরস্কার অর্জন করেছে।

তিনি বলেন, এজন্য ফেনীর পূর্ববর্তী সিভিল সার্জনদের অবদান অনস্বীকার্য। এসময় তিনি ডাঃ হাসান শাহরিয়ার কবির, ডাঃ সাজ্জাদ হোসেনের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। এছাড়া যারা স্বাস্থ্য সেবাগ্রহণের জন্য আমাদের কাছে আসেন, তাদের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য আমরা সঠিকভাবে সেবা প্রদান করতে পেরেছি। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীসহ মাঠপর্যায়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি প্রয়াত সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেনর আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করছেন সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ উৎপল দাশ

সিভিল সার্জন বলেন, এ প্রাপ্তি আমাদের দায়বদ্ধতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ভবিষ্যতে ফেনীর স্বাস্থ্যসেবার মান সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে আমরা কাজ করে যাব। আমি আশা করব, স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট সকলে এ অর্জন ধরে রাখার জন্য আরও বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখবেন।

অন্যদিকে পুরস্কার প্রাপ্তির বিষয়ে দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রুবাইয়েত বিন করিম বলেন, স্বাস্থ্যসেবা একটি চলমান প্রক্রিয়া। সীমিত জনবল ও সম্পদ নিয়ে দাগনভূঞা স্বাস্থ্য বিভাগ মানুষের দোড়গোড়ায় স্বাস্থ্যসেবাকে পৌঁছে দেবার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে সফলতা লাভ করেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সকল কর্মকর্তা, স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্য সহকারিদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ সফলতা অর্জিত হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ হাসান শাহরিয়ার কবিরসহ পুরস্কার হাতে ফেনীর স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা

সেবা প্রদানের বিষয়ে ডাঃ রুবাইয়েত বলেন, করোনা মহামারীতে আমাদের সেবা কখনো বন্ধ হয়নি। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতনের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত করোনা আইসোলেশন ইউনিটে ১১০জন রোগীকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নিয়মিতভাবে কাজ করেছেন। ভবিষ্যতে এ সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

স্বাস্থ্যসেবায় দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ পুরস্কার পাওয়ায় ফেনী স্বাস্থ্য বিভাগকে অভিনন্দন জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ হাসান শাহরিয়ার কবির।

এই পুরষ্কার প্রাপ্তি ফেনীর জনগণের স্বাস্থ্যসেবায় তাদের উদ্যোগ ও প্রচেষ্টাকে আরও তরান্বিত করবে বলে প্রত্যাশা করছেন বিএমএ ফেনী জেলা সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ সাহেদুল ইসলাম কাওসার। সকলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি।