‘ফেনীকে যারা ভালোবাসেন, এ জন্মভূমির প্রতি যাদের মমত্ব আছে, তারা সকলে মিলে এটিকে ব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরুন। সকলে মিলে ফেনীর গৌরব, ঐতিহাস, ঐতিহ্যর বিষয়বস্তুগুলো প্রচার করুন। আমরা যারা ফেনীতে কর্মসুত্রে এসেছি আমাদেরও দায়িত্ব ফেনীকে ব্র্যান্ডিং করতে কাজ করা, কিন্তু আপনারা যারা ফেনীর মানুষ আপনাদের এগিয়ে আসতে সবচেয়ে বেশী।”

আজ বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা ব্র্যান্ডিং বাস্তবায়ন কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান।

জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় সকলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ফেনীর যে স্থাপনাটা ব্র্যান্ডিং করা প্রয়োজন আমাদের জানাবেন। আমরা ব্যাবস্থা নিব। এজন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা রাখতে হবে।

সভায় জাতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ছাগলনাইয়ার শিলুয়ার শিলপাথর, চাঁদগাজী মসজিদ, শর্শদী শাহী মসজিদ, মোহাম্মদ আলী চৌধুরী মসজিদ এর সীমানা প্রাচীর নির্মানে উদ্যোগ নেবার প্রস্তাব করেন উপস্থিত সাংবাদিকরা। জবাবে জেলা প্রশাসক এ ব্যাপারে লিখিত দাবী জানালে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।

এসময় প্রতাপপুর জমিদার বাড়ী, পাগলা মিয়ার মাজারকে জাতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের আওতায় আনার দাবী জানালে জেলা প্রশাসক বলেন, এ বিষয়ে লিখিত দাবী জানালে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।

ফেনীর ভূ অবস্থান দিকের কথা তুলে ধরে মোঃ ওয়াহিদুজজামান বলেন, ঢাকা থেকে কক্সবাজার যেতে প্রায় ১২ ঘন্টা সময় লাগে। কিন্তু ঢাকা থেকে কক্সবাজার সরাসরি না গিয়ে যদি একদিন ফেনীতে থেকে পরদিন আবার রওনা দেয়া যায় তাহলে ভ্রমনকারীরা ফেনীকেও ঘুরে দেখতে পারবেন, সেটিও একটি ব্র্যান্ডিং হবে।

তিনি বলেন, ভ্রমণকারীরা আশেপাশে নোয়াখালী, লক্ষীপুর ও ঘুরে যেতে পারবেন ফেনীতে একদিন থাকলে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ব্যক্তিগত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।

এছাড়াও ফেনীর যে বিষয়গুলো গতবারের ব্র্যান্ডিং বইতে আসেনি তা এবার যাতে বাদ না যায় সে জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা বলেন তিনি।

২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৬৯ সালে ফেনীতে বঙ্গবন্ধুর প্রথম আগমন উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একটি বই প্রকাশ করা হবে জানান জেলা প্রশাসক। ফেনী মুক্ত দিবসের একটি বই বের করার ইচ্ছার কথাও জানান তিনি।
এছাড়াও সভায় ফেনীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ব্যান্ডিং এর আওতায় আনার প্রস্তাব দেওয়া হয় এবং ব্যান্ডিং বাস্তবায়নে বিভিন্ন উপ কমিটি গঠন করা হয়। এসব উপকমিটির মাধ্যমে পরবর্তীতে আবার সভা করে গৃহীত সিদ্ধান্ত নিয়ে বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোছাঃ সুমনী আক্তার ফেনীকে ব্যান্ডিং করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, ব্র্যান্ডিং করা জায়গাগুলোতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে একটি সাইনবোর্ড স্থাপন করে এর পরিচিতি তুলে ধরলে এর সম্পর্কে মানুষ ধারণা লাভ করতে পারবে।

সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম জাকারিয়া ব্র্যান্ডিংটা হালনাগাদ করা হবে জানান। সেটিকে আকর্ষণীয় করতে তুলতে ও বাদ পড়া বিষয়গুলো যুক্ত করতে খেয়াল রাখা হবে জানান তিনি।

জেলা তথ্য অফিসার রেজাউল রাব্বী মনির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘জেলা ব্যান্ডিং ফেনী’ গ্রুপ করে ছবিগুলো প্রচার করার পরামর্শ দেন। যাতে করে ভ্রমনকারীরা অনলাইনে দেখে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

ছাগলনাইয়া পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ মোস্তফা ব্র্যান্ডিং এর কাজে জেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।

সভায় জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।