নোয়াখালী আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাব হতে সর্বশেষ প্রকাশিত পরশুরামের ১৫টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে আরও ৭ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি ২টি নমুনা পরীক্ষায় ১টি পজেটিভ। এ নিয়ে উপজেলায় মোট শনাক্তকৃত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে হলো ১২২ জন।

আজ বুবার (৩১ জুলাই) উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল খালেক মামুন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ প্রদত্ত তথ্যমতে আজ পর্যন্ত মোট সংগৃহীত ৫৮৭টি নমুনার সবগুলোর ফলাফল পাওয়া গেছে। অর্থাৎ প্রতি ৪টি নমুনার মধ্যে ১টি পজিটিভ এসেছে। শনাক্তের হার প্রায় ২০ শতাংশ। শনাক্তকৃতদের মধ্যে ২ জন বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে। ৭ জনকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকীরা স্বাস্থ্য বিভাগের তদারকিতে নিজ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এছাড়া আজ উপজেলায় আরও ৩৫ জনকে সুস্থ ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ নিয়ে মোট ৯৪ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়েছেন বলে জানান স্বাস্থ্য বিভাগ। সুস্থতার হার প্রায় ৭৭ শতাংশ।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, নতুন শনাক্তকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের ১ জন কর্মচারী, চিথলিয়া ইউনিয়নের ২জন এবং অন্যরা পৌর এলাকার বাসিন্দা।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ প্রদত্ত তথ্যমতে, এ পর্যন্ত পরশুরামে ১২২ জন রোগীর মধ্যে সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছে পৌর এলাকায়। শনাক্তের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মির্জানগর ইউনিয়ন। এরপরে রয়েছে চিথলিয়া ও বক্সমাহমুদ ইউনিয়ন। এছাড়া পরশুরামের বাইরের ৩ জন রোগী রয়েছে।

করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ৪ জুলাই বক্সমাহমুদের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল ইসলামের মৃত্যু হয়। যা উপজেলায় করোনায় প্রথম মৃত্যু। আজ পর্যন্ত উপজেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে উপজেলায় মোট ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডাঃ ইন্দ্রজিৎ ঘোষ কনক বলেন, শুরুর দিনের তুলনায় মানুষের মাঝে এখন তেমন সচেতনতা লক্ষ্য করা যায়না। এর ফলে সংক্রমণের হার বাড়ছে।

জনসাধারণের অসেচতনার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ডাঃ ইন্দ্রজিৎ বলেন, হাসপাতালে আগত রোগীদের মাস্ক পর্যন্ত থাকেনা। আমাদের নার্স বা দায়িত্বশীলরা বললে বিপরীতে তারা আক্রমনাত্মক আচরণ করে। এর ফলে আজ উপজেলায় আক্রান্তের বেশিরভাগ স্বাস্থ্য বিভাগ সংশ্লিষ্ট।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানান, করোনা আক্রান্ত হয়েও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবিকা, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন দপ্তরের দায়িত্বরত ব্যক্তিরা সুস্থ্য হয়ে আবার কাজে যোগদান করেছেন। এখানে সুস্থতার হারও তুলনামূলক বেশি। তাদের করোনা যুদ্ধ জয় করে আবার কাজে ফেরার বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক।

এর আগে গত ৩১ জুলাই পরশুরামে একদিনে সর্বোচ্চ ১৯ জনের দেহে করোনা শনাক্ত করা হয়েছিল।

গত ১৬ মে উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৪ জন সেবিকার দেহে প্রথম করোনা শনাক্তের কথা জানান স্বাস্থ্য বিভাগ।

সূত্র জানায়, আক্রান্তের মধ্যে শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধাসহ, স্বাস্থ্যকর্মী, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, ব্যাংক কর্মকর্তা, পুলিশ, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ রয়েছেন।