আট বছরের নাজনিন আক্তারকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে পালক পিতা-মাতা। তার ঠোঁট কেটে ফুলে উঠেছে। সারা দেহে মারের দাগ, কপালে পূর্বের নির্যাতনের চিহ্ন।

ভীত সন্ত্রস্ত কন্ঠে নাজনীন বলে, 'আঁই ডিম ইগ্গা খাইসি দেই বাঁশের লাডি দি মাইচ্ছে।' দত্তক নেয়া পরিবার নাজনিনকে শুধু পিটিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, মুমূর্ষু ও রক্তাক্ত অবস্থায় বুধবার রাতে বাইরে ফেলে রাখে।

আজ বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় ফেনী শহরের রামপুর সৈয়দ বাড়ি সংলগ্ন মোস্তফা কমিশনারের বাড়ির নিচতলা হতে তাকে উদ্ধার করে র‌্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের সদস্যরা। পরে চিকিৎসার্থে হাসপাতালে পাঠায়, একই সময়ে অভিযুক্ত গৃহকর্তা জামাল উদ্দিন ও গৃহকর্তী নাজমা আক্তারকে আটক করা হয়।

র‌্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ও সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মোঃ নুরুজ্জামান বলেন, আহত নাজনিন আক্তারকে ৬ বছর পূর্বে অভিযুক্ত পরিবার ফুলগাজী হতে দত্তক আনে। কিন্তু পরবর্তীতে তারা বাচ্চাটিকে কাজের মেয়ে হিসেবে পরিচালিত করে। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নাজনিনকে উদ্ধার করা হয়েছে। সে সুস্থ হলে সমাজ সেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

বুধবার রাতে নাজনীনকে উদ্ধারকারী প্রতিবেশী রুনা ইয়াসমিন জানান, তাকে নির্যাতন করে বাইরে ফেলে রাখলে রক্তাক্ত অবস্থায় নাজনিনকে ঘরে এনে রাখা হয়। রাতভর তার জ্বর ছিল, প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ক্ষতস্থান হতে রক্ত বন্ধ করা হয়েছে।

অভিযুক্ত গৃহকর্তী নাজমা আক্তারের ভাই রিপন হোসেন জানান, আমার বোনের চার ছেলে। মেয়ে নেই দেখে নাজনিনকে দত্তক নেয়। কিন্তু প্রায় মেয়েটিকে মারধর করা হত। মেয়েটিকে দত্তক আনা হলেও কাজের মেয়ে হিসেবে থাকত। রাতে তাকে বারান্দায় রাখা হত, কোনোকিছু হলেই নির্যাতন করা হত।

অভিযুক্ত গৃহকর্তা জামাল উদ্দিন জানান, ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের দরবারপুর গ্রামে নাজনিন আক্তারের নানা নানু হতে দত্তক নেয়া হয়েছে। বর্তমানে জামাল উদ্দিন কর্মহীন হলেও পূর্বে শহরের শহীদ হোসেন উদ্দিন বিপনী বিতানে অপু ইলেকট্রনিক্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন।