কিট সংকটে পাঁচদিন বন্ধ থাকার পর নোয়াখালীর আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে মঙ্গলবার হতে পুনরায় নুমনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। বুধবার ওই ল্যাবে একদিনে ফেনীর সর্বোচ্চ ৩৯২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ফেনীতে নতুন করে আরও ৭৮ জনের দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত করা হয়েছে বলে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে। অর্থাৎ প্রতি ৫টি নমুনার মধ্যে ১টি পজিটিভ এসেছে। মোট শনাক্তের হার ২০শতাংশ।

এটি এখন পর্যন্ত ফেনীতে একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত করা সংখ্যা। এর আগে গত ১৩ জুন ফেনীতে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৫৫জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছিল।

এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৭শ ছুঁই ছুঁই করছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৪৯ জনে। এছাড়া আরও একজনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১৫। আজ আরও ৮১জন সুস্থ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন মোট ২৭৪জন।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গতকাল আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে ফেনীর ৩৯২টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। তার মধ্যে ৮০টি নমুনা পজিটিভ, এর মধ্যে ২টি নমুনা ছিল ২য় দফায় সংগৃহীত। নতুন শনাক্তকৃতদের মধ্যে ফেনী সদরে ৩১জন, দাগনভূঞায় ২০জন, সোনাগাজীতে ১২জন, ফুলগাজীতে ২জন ও পরশুরামে ২জন রয়েছেন। এছাড়া আরও একজন রয়েছেন ফেনীর বাইরের বাসিন্দা।

সূত্র জানায়, নতুন শনাক্তকৃতদের মধ্যে আটজন রয়েছেন পুলিশ বিভাগে কর্মরত। এদের মধ্যে চারজন দাগনভূঞা, তিনজন সোনাগাজী ও একজন ফুলগাজীতে কর্মরত আছেন। এছাড়া ছাগলনাইয়ায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের এক স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সোনাগাজীর এক ব্যাংক কর্মকর্তাও রয়েছেন। এছাড়া সোনাগাজীতে আক্রান্ত আমিরাবাদ ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে উপসর্গ নিয়ে মৃত এক ব্যক্তির সংগৃহীত নমুনা পজিটিভ এসেছে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত জেলায় মোট শনাক্তকৃত রোগীদের মধ্যে সদরে সর্বোচ্চ সংখ্যক শনাক্ত হয়েছে ২৯১জন। শনাক্তকৃত সংখ্যার ভিত্তিতে জেলায় দ্বিতীয় অবস্থানে দাগনভুঞা উপজেলায় এ পর্যন্ত মোট ১৬০ জন শনাক্ত হয়েছে। এরপরে রয়েছে সোনাগাজীতে ১১৭জন, ছাগলনাইয়ায় ৯০জন, পরশুরামে ৩৩জন ও ফুলগাজীতে ৩৬জন। এছাড়া আরও ১৩জন রয়েছেন ফেনী জেলার বাইরের বাসিন্দা, ফেনীতে তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, বর্তমানে ৩৬ জন করোনা রোগী ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। অন্যরা স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনে হোম আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ১৭জনকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, এ পর্যন্ত সংগৃহীত মোট ৪ হাজার ৬৫২টি নমুনার মধ্যে মধ্যে ৩ হাজার ৭৬১টি নমুনার ফল পাওয়া গেছে। আজ পরীক্ষার জন্য আরও ১০২টি নমুনা প্রেরণ করা হয়েছে।

এর আগে গত এক সপ্তাহে ফেনীতে সর্বোচ্চ সংখ্যক ২২৬জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। গত ১২ জুন থেকে ১৮জুন পর্যন্ত মোট নুমনা পরীক্ষার করা হয়েছে ৭২৫টি। অর্থাৎ প্রায় ৩টি নুমনার মধ্যে একজন পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে। মোট শনাক্তের হার প্রায় ৩১শতাংশ।

১৬ এপ্রিল জেলার ছাগলাইনাইয়া উপজেলায় এক যুবকের শরীরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। প্রথম মাসের তুলনায় দ্বিতীয় মাসে রোগীর সংখ্যা প্রায় ২০ বেড়েছে। এর আগে গত ১৬ এপ্রিল হতে ১৬ মে পর্যন্ত শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা ছিল ৩০ জন। আর গত ১৬ মে হতে আজ ২৫ জুন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৪০ দিনে ৭১৫জন রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।