করোনা দুর্যোগে চলমান অচলাবস্থায় ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় পৌর এলাকা ও ৯ ইউনিয়নে সরকারের খাদ্য সহায়তা পেয়েছে ২৫ হাজার ২১ পরিবার। সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অজিত দেব জানান, সরকারের ২৫৮ টন চাল ব্যতীত অন্যান্য খাদ্যপণ্য ক্রয়ের জন্য জেলা হতে চলতি মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত ১৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা উপ-বরাদ্দ এসেছে। এছাড়া সহায়তা পেয়েছে কওমি মাদ্রাসার এতিম ও দুঃস্থ শিক্ষার্থী, জেলে এবং শিশু।


উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান, সরবরাহকৃত খাদ্যের মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, বুট, আলু, পেয়াজ, তেল, চিড়া। প্রাপ্ত ২৬০ প্যাকেট শিশু খাদ্যের মধ্যে রয়েছে গুড়োদুধ, চিনি, খেজুর, সুজি, বল সাবান, টয়লেট সাবান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত উপজেলার পৌরসভায় সরকারি খাদ্য সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে দুঃস্থ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সংখ্যা ১ হাজার ৮৮১ পরিবার। এছাড়া ইউনিয়নের মধ্যে চর মজলিশপুর ২ হাজার ১৩২ পরিবার, বগাদানায় ২ হাজার ১৪০ পরিবার, মঙ্গলকান্দি ২ হাজার ৩৩ পরিবার, মতিগঞ্জ ২ হাজার ২৩৮ পরিবার, চরদরবেশ ৩ হাজার ৯০০ পরিবার, চরচান্দিয়া ৩ হাজার ৫০০ পরিবার৷ সোনাগাজী সদর ইউনিয়নে ১ হাজার ৯৩৬ পরিবার আমিরাবাদে ৩ হাজার ১০৭ পরিবার এবং নবাবপুর ইউনিয়নে ২ হাজার ৩৪ পরিবারে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, উপকারভোগীদের মধ্যে দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, মসজিদের ইমাম মুয়াজ্জিন ছাড়াও অসচ্ছল প্রতিবন্ধী, হকার, পরিবহন শ্রমিক, হোটেল শ্রমিক, হিজড়া সম্প্রদায়, বেদে সম্প্রদায়, ভিক্ষুক, ভবঘুরে, দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যান গাড়ি চালক, চা দোকানি, আবাসনের বাসিন্দা রয়েছেন।এছাড়াও ট্রিপল থ্রি নম্বরে সহায়তা চাওয়া পরিবারগুলো এর মধ্যে রয়েছে।

উপকারভোগীদের তালিকা প্রণোয়ন বিষয়ে সদর ইউএনও বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়াও যেকোনো ব্যক্তব যোগাযোগ করলে খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

ইউএনও জানান, চলমান করোনাকালীন দুর্যোগে সোনাগাজীতে ১৭ কওমি মাদ্রাসায় দুঃস্থ ও এতিমদের জন্য ২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা সরকারি সহায়তা ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।


তিনি আরও জানান, জাটকা আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ১২০ জেলেকে মাসে ৪০ কেজি খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের 'কোভিড-১৯ বিশেষ মানবিক সহায়তা কর্মসূচী'র আওতায় বিশেষ সহায়তা কার্ড প্রসঙ্গে ইউএনও বলেন, জনসংখ্যার ভিত্তিতে বিভিন্ন ইউনিয়নে অসহায় পরিবার গুলোর সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সমন্বয়ে উপজেলার ৯ ইউনিয়ন ও পৌরসভা হতে ১০ হাজার পরিবারের তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। কার্ডধারিরা প্রতিমাসে ২০ কেজি করে চাল পাবেন। তবে তারা অন্য আর কোনো সহায়তা পাবেন না।

চর দরবেশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যন নুরুল ইসলাম ভুট্টো জানান, ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ডে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সমাজপতিদের সমন্বয়ে উপকারভোগীদের তালিকা করা হয়েছে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার যেন যথাযথ মানুষের কাছে পৌঁছে তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি।

ছবিঃ ফাইল ছবি