ফেনী সদর ও পরশুরাম ব্যতীত জেলার বাকী ৪ উপজেলায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত করা হয়েছে। আজ বুধবার (৬ মে) বিকাল পর্যন্ত জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ জনে। তাদের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও তিনজন মহিলা। এদের মধ্যে আজ করোনা আক্রান্ত দুই যুবক সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।


আক্রান্তদের মধ্যে ২ জন দাগনভূঞার এবং ১ জন করে সোনাগাজী, ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজীর বাসিন্দা, আরেকজনের বাড়ি চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের অলিনগর গ্রামে হলেও তিনি ফেনীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনাক্ত হয়েছেন।


আজ বুধবার বিকালে নতুন করে শনাক্তকৃত আরও দুইজনের কথা জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ। আক্রান্ত দুইজনই কিশোরী। তাদের একজনের বয়স ১৩ ও অপরজনের বয়স ১৫ বছর। স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, তাদের মধ্যে একজন ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা। অপরজন মিরসরাই হতে ফেনীর ছাগলনাইয়ায় ঘোপাল ইউনিয়নে নানা বাড়ি বেড়াতে এসে জ্বর শ্বাসকষ্ট নিয়ে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন।


ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইকবাল হোসেন ভূঞা জানান, গত ২ মে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ফেনী জেনারেল হাসাপাতালে আসা ওই কিশোরীর নুমনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। আজ নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে তার দেহে করোনা সংক্রমণের অস্তিত্ত্ব মেলে।

তিনি জানান, ওই কিশোরীর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। তার শ্বাসকষ্ট রয়েছে। এছাড়া তার ফুসফুসে পানি জমে গেছে। তাকে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে করোনা ডেডিকেটেড এ্যাম্বুলেন্সযোগে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।


মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিন জানান, খবর পেয়ে তার বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। ওই মেয়ের বাবা চট্টগ্রামে সিএন্ডএফ এজেন্সিতে চাকুরী করেন। সে সূত্রে তিনি চট্টগ্রামে আসা যাওয়ার মধ্যে রয়েছেন। ধারনা করা হচ্ছে বাবার মাধ্যমেই সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারে সে।


তিনি বলেন, আগামীকাল পরিবারের বাকি সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। ওই পরিবারটি সহ পাশ্ববর্তী কয়েকটি পরিবারকে লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে।


অপরদিকে ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোজাম্মেল হক জানান, গত ২৯ এপ্রিল ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওই কিশোরীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আজ তার নমুনা পরীক্ষা ফলাফলে করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। ইতিমধ্যে প্রশাসন ওই বাড়িটি লকডাউন করেছে। আগামীকাল ওই পরিবারের অন্যান্য সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করা হবে বলে জানান তিনি।


ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, আক্রান্ত কিশোরীর বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।


জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, আজ পর্যন্ত ফেনীতে করোনা সংক্রমণ নিরূপণে ৪৯৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৩০৬টির ফলাফল পাওয়া গেছে, এর মধ্যে ৬টি পজিটিভ।


এর আগে গত ১৬ এপ্রিল ফেনীর ছাগলনাইয়ায় প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। এরপর ২০ এপ্রিল সোনাগাজীতে ২য় কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হন। এরপর গত ২৯ এপ্রিল দাগনভূঞা উপজেলায় ২ জন শনাক্ত করা হয়। এর মধ্যে প্রথম আক্রান্ত দুই ব্যক্তি ফেনী কোভিড হাসপাতাল হতে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন বলে স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়।