আজ মহান মে দিবস। ফেনীতে প্রতিবছর মহান মে দিবসে উদযাপনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হলেও এবার ব্যতিক্রম। নীরবেই চলে যাচ্ছে দিনটি। তবে চলমান সাধারণ ছুটি ও করোনা প্রাদুর্ভাব রোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে মাঠে না থাকলেও যার যার অবস্থান থেকে দাবি জানাচ্ছেন ফেনীর শ্রমিক নেতারা।


ফেনী জেলা ট্রাক, মিনিট্রাক, কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী জানান, তাদের নিবন্ধিত সদস্য রয়েছে ৬ হাজারের অধিক। তিনি বলেন, শ্রমিকদের বাঁচিয়ে রাখতে সরকারিভাবে রেশন কার্ড দিতে হবে। যেভাবে সেনাবাহিনী পুলিশ পেয়ে থাকে।


তিনি বলেন, চলমান অচলাবস্থায় আমাদের সদস্যরা অসহায় অবস্থায় আছে। তাদের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় খাদ্য সরবরাহের দাবী করছি।


বাংলাদেশ আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ফেনীর সম্পাদক মোঃ আজম চৌধুরী বলেন, ফেনীতে ৬শ পরিবহন শ্রমিক রয়েছে। শ্রমিকদের খাদ্য নিরাপত্তায় স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের কাছে দাবী জানাই। তিনি বলেন, চলনমান অচলাবস্থায় তীব্র আর্থিক কষ্টে আছে তারা। এ পর্যন্ত মাত্র ১০৭ জন খাদ্য সহায়তা পেয়েছে। আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে সবার খাদ্য সরবরাহের জন্য তালিকা প্রদান করছি।


জাতীয় শ্রমিক লীগ বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা সুইটমিট ও হোটেল কর্মচারী ইউনিয়নের উপদেষ্টা জালাল আহাম্মদ হাজারী জানান, ফেনীতে ৩ হাজার হোটেল শ্রমিক রয়েছে। করোনার কথা বলে মালিকগণ শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছেন না। প্রতিবছরই আমাদের আন্দোলন থাকে রমজানে শ্রমিক কাজ করবে না কিন্তু বেতন চালিয়ে যেতে হবে।


সাধারণ সম্পাদক আবু শাহীন বলেন, শ্রমিকরা ভালো নেই। তীব্র আর্থিক সংকটে রয়েছে। এ পরিস্থিতি ছাড়াও সারা বছর শ্রমিকদের আর্থিক মুক্তির জন্য আমরা সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী জানিয়ে যাচ্ছি।


ফেনী জেলা সিএনজি চালিত অটোরিক্সা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, ফেনীতে প্রায় ১২ হাজার শ্রমিক রয়েছে। চলমান অবস্থায় শ্রমিকের আর্থিক যোগানের ব্যবস্থা নেই। কাজ নেই, ঘরে ভাত নেই। আমাদের মাধ্যমে শ্রমিকদের জন্য কেউ কোনো আর্থিক সহায়তা দেয়নি। যতটুকু পেরেছি নিজেরা করছি।


মিনিট্রাক চালক আবদুল লতিফ (৩৮) বলেন, ট্রিপ পাইলে মালিকের ইনকাম হয়, আমাদেরও হয়। একসময় খোরাকি ছিল এখন নেই। গাড়ি চললে বেতন, নইলে নাই।


ফেনী সোনাগাজী আঞ্চলিক সড়কের সিএনজি অটোরিকশা চালক মোঃ নাসির বলেন, আমরা বহুবার সরকারের কাছে আবেদন করেছি লাইসেন্স দিতে। এখনো লাইসেন্স দেয় নি। এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে আমাদের আয় রোজগার একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে করোনা নয়, যেন না খেয়েই মারা যাব।