করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে চলমান অচলাবস্থায় মসলা জাতীয় পণ্যের দাম উর্ধ্বগতি হলেও কাঁচাবাজার ও ব্রয়লার মুরগির দাম নিম্নমুখী। আজ রবিবার (২৬ এপ্রিল) সকালে ফেনী শহরের খুচরা বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১১০ টাকা হতে ১১৫ টাকা। এতে করে পুঁজি হারিয়েছেন ছোট বড় অনেক উদ্যোক্তা। তবে রমজান ঈদের আগে বা পরে দাম উঠে যেতে পারে ২শ টাকার বেশী, দাবী করলেন ফেনীর একাধিক ব্রয়লার খামারি।


জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, ফেনীতে মোট ৯৮২টি পোল্ট্রি খামার রয়েছে। জেলায় বছরে সব ধরনের মাংসের চাহিদা রয়েছে ৬৫ হাজার টন, উৎপাদন হচ্ছে ৫৮ হাজার টন।


ব্রয়লার মুরগির চাহিদা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবধরণের মাংসের চাহিদার তুলনায় জেলায় উৎপাদন কম হলেও ব্রয়লার মুরগি চাহিদার তুলনায় বেশী রয়েছে। তবে এ মুহূর্তে করোনার ভয়ে ছোট খামারগুলোর বেশীরভাগই উৎপাদন বন্ধ রেখেছে।


ছাগলনাইয়ার রেজুমিঞায় ব্রয়লার খামারি আজাদ হোসেন রাসেল বলেন, সরকারী ছুটি, করোনা আতংক মিলে আমি পুঁজি হারানোর ভয়ে ৩ হাজার মুরগি ৮০ টাকা কেজি দরে বেচে দিয়েছি। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে বাচ্চা তুলবো না।


পরশুরামের ব্রয়লার ব্যবসায়ী কামরুল বলেন, যেভাবে করোনার আতংক ছড়িয়েছে তাতে মুরগি কেনার মানুষ থাকবে কিনা সেই ভয়ে খামারে নতুন বাচ্চা তুলছি না।


মডার্ণ এগ্রো ফার্মের মালিক কামরুল আলম বলেন, পাইকারী বাজারে আজ রবিবার নাগাদ কেজি ১০০ টাকা উঠলেও বেশ কিছুদিন তা ৮০-৯০ টাকার মধ্যে আঁটকে ছিল। তিনি বলেন, ৩২ দিন লালনপালন করতে সোয়া ২ কেজি খাদ্যের প্রয়োজন। প্রতি কেজি পোল্ট্রি খাদ্যের দাম ৪৫ টাকা। নূন্যতম ১৩০ টাকা কেজি না হলে ব্রয়লার মুরগি ব্যবসায়ীরা টিকতে পারবে না।


কামরুল বলেন, ফেনীর বেশীরভাগ ছোট খামারে নতুন করে বাচ্চা তোলা হচ্ছে না। ফলে রমজান ঈদের আগে বা পরে একটি সংকট বাজারে তৈরী হবে। এতে কেজি প্রতি দাম ২শ টাকা ছাড়িয়ে যাবে।


তিনি বলেন, এটি মুলত বাচ্চা উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ও বড়বড় খামারির অব্যবসায়ীসুলভ আচরণের কারনে এমন হচ্ছে। বাচ্চা ও খাদ্যের দাম অতিরিক্ত বাড়িয়ে দিচ্ছে কিন্তু পুর্ণবয়স্ক মুরগির দাম কমে যাচ্ছে। ফলে বিলীন হচ্ছে ছোট ব্যবসায়ী।


সোনাগাজী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, করোনা পরিস্থিতি ও গত কয়েক মাসে লোকসান গুণে ছোট খামারীরা উৎপাদন বন্ধ করে দিচ্ছে। এতে করে দাম বাড়বে তবে সংকট থাকবে না। তিনি বলেন, দাম বাড়লে ছোট খামারিরা আবার উৎপাদন শুরু করবে ফলে পোল্ট্রি মুরগির দাম দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

 

ছবিঃ ইন্টারনেট