ফেনীতে শানক্তকৃত দ্বিতীয় কোভিড-১৯ রোগী সোনাগাজীর যুবক প্রবাসী নন, এমনকি তিনি ফেনীর বাইরেও যান নি। তার সংক্রমণে চিন্তিত স্থানীয় মানুষ, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি। আশংকা করা হচ্ছে উপজেলায় আরও কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তি থাকতে পারেন।
সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তি সোনাগাজীতে একটি ক্লিনিকের ল্যাব টেকনেশিয়ান। সেখানে বিভিন্ন ধরনের লোকজন আসা যাওয়া করে। তারচেয়ে বড় কথা আক্রান্ত যুবক সরাসরি কোন বিদেশী ব্যক্তির সংস্পর্শে আসেননি বা ফেনীর বাইরে থেকে এসেছেন, এমনও নয়। এর মানে তিনি অন্য কোন ব্যক্তির মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন।
ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় এ মুহূর্তের জন্য সোনাগাজী ফেনীর জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি বলেন, গত দুইদিনে ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ২১ ব্যক্তিসহ ওই উপজেলা হতে ৪১জনের নুমনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য বিআইটিআইডিতে পাঠিয়েছি। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যেই পরীক্ষার ফলাফল আমরা পেয়ে যাব। তখন বোঝা যাবে, আসলে কি অবস্থা দাঁড়াচ্ছে ফেনীতে।
আক্রান্ত হওয়া ওই ব্যক্তির বাড়ি সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চর চান্দিয়া এলাকায়।
এ আশংকার কথা প্রকাশ করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের করণীয় আমরা করে যাচ্ছি। মানুষকে বোঝানো হচ্ছে। ওই ব্যক্তির সাথে যতজনের কন্টাক্ট হয়েছে, তাদের আমরা শনাক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যতজন চিহ্নিত করতে পারছি ততজনের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। আজকেও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তি ১৫দিন পর্যন্ত গলাব্যাথা নিয়ে চলাফেরা করেছে যেখানে সেখানে। এক পর্যায়ে সে স্বপ্রণোদিত হয়ে পরীক্ষা করে। এর আগে সে কতদিন কতজনের সাথে মিশছে সেটা চিন্তার বিষয়। সেটি চিহ্নিত করা অনেক কঠিন হয়ে গেছে।
স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আক্রান্ত ব্যক্তি ও তার সহকর্মীদের ১৬টি বাড়ি লকডাউন করেছে প্রশাসন। এছাড়া তার কর্মস্থল সোনাগাজী ক্লিনিক বন্ধ করে সকল কর্মচারীকে বাধ্যতামুলক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।
ইতোমধ্যে সোনাগাজী উপজেলা প্রশাসন যাতায়াতের ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে।
এ নিয়ে আংতকে রয়েছে স্থানীয়রাও। তাদের মধ্যে বিরাজ করছে ভীতি আর আশংকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, যেদিন তার ফলাফল পজিটিভ আসে, সে রাতেও আমরা তাকে বাজারে চলাফেরা করতে দেখেছি। তাকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল, সে তা মানেনি। তার এ অসেচতনতার কারণে আমরাও বিপদাপন্ন হয়ে পড়েছি।
এর আগে গত ১৬ এপ্রিল ওই যুবকের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজে (বিআইটিআইডি) পাঠায় স্বাস্থ্য বিভাগ। গত সোমবার রাতে তাঁর নমুনার পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ আসে। এ নিয়ে জেলায় এখন পর্যন্ত দুইজন আক্রান্ত হয়েছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে। আক্রান্তদের জেলার একমাত্র করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল ফেনী ট্রমা সেন্টারে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।