হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ফেনী জেলা শাখার আয়োজনে ফেনীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে শানে রেসালাত সম্মেলন। শুক্রবার (৫ মার্চ) ফেনীর মিজান ময়দানে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেফাজত ইসলাম আমীর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।
এসময় আল্লাহ্ ও রাসুলের বিরুদ্ধে কটুক্তিকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান বক্তারা।
সম্মেলনে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, সারা বিশ্বের মুসলমানদের ঈমান আকীদা নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করছে উগ্রবাদী হিন্দু ও বিধর্মীরা। বাংলাদেশের নাস্তিক মুরতাদরা মুসলমানের প্রাণের স্পন্দন বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (স.) এর শানে বেয়াদবিমূলক কটুক্তি করলেও বাংলাদেশ সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর কোন ভুমিকা নেয়নি। বরং নানা ভাবে সরকার নাস্তিকদের পক্ষ অবলম্বন করে চলছে। আল্লাহ্ ও রাসূলের বিরুদ্ধে কটুক্তি কারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের দাবিতে হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ কঠোর থেকে কঠোর আন্দোলন করতে প্রস্তুত।
হেফাজতের আমীর আরও বলেন, আল্লাহ্'র মনোনীত একমাত্র ধর্ম ইসলাম। ইসলামই মানবজাতির একমাত্র পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। মহাগ্রন্থ আল কুরআন, নামাজ রোজা, হজ ও যাকাত পালনের মাধ্যমে মানুষ দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণকামী হন৷ সমাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি সহ মানব জাতির যাবতীয় কল্যাণের বিষয় ইসলাম বিদ্যমান। হযরত মোহাম্মদ (স.) কে নিয়ে ফ্রান্সের নাগরিক ম্যাক্রোর কার্টুন নির্মাণের তীব্র প্রতিবাদ করে তিনি বলেন এরা মানবতার দুশমন। এদেরকে হত্যা করাই একমাত্র বিচার হতে পারে। ভারতের মুসলমানদের উপর নির্যাতন ও বাবরি মসজিদ ভেঙে মন্দির গড়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মৌদিকে নমরুদ, ফেরাউন ও আবু জাহেলের দোসর বলে আখ্যা দেন তিনি।
ফেনী জেলা হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ওমর ফারুকের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম জিহাদী, যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ আল হাবীব, আল্লামা মামুনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, সহকারী মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, তথ্য-গবেষণা সম্পাদক জাগ্রত কবি মুহিব খান।
হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের আগমনের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার জুমার পর থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা মিজান ময়দানে জমায়েত হতে থাকেন। লোকে লোকারণ্য মিজান ময়দানে তিল ঠাঁইয়ের জায়গা ছিলো না। আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে প্রকম্পিত হতে থাকে পুরো এলাকা। সকাল দশটা থেকে শুরু হওয়া সম্মেলনে একে একে বক্তব্য রাখেন জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। সম্মেলনের মূল আকর্ষণ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হকের বক্তব্য ও আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে সম্মেলন শেষ হয়।
আল্লামা মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশের মুসলমানদের ঈমান আকীদা নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না। মুসলমানদের ঈমান আমলের পাহারাদার হিসেবে হক্কানি ওলামা মশায়েখ সদা জাগ্রত। আল্লাহ ও রাসুলের শান ও মান নিয়ে কোন কটুক্তি করে কোন ইসলাম বিদ্বেষীকে বাংলার জমিনে থাকতে দেয়া হবে না। নাস্তিক মুরতাদদের বিচারের মুখোমুখি করা সরকারের দায়িত্ব। বাংলাদেশের নাস্তিক মুরতাদরা মোহাম্মদ (স.) এর শানে বেয়াদবিপূর্ণ কটুক্তি করার পরও সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। নাস্তিকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে আইন প্রণয়ন করার জন্য বলা হলেও সরকার নাস্তিক মুরতাদদের পক্ষে অবস্থান করছে।
রাষ্ট্রীয়ভাবে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা ও আল্লাহ রাসুলের বিরুদ্ধে কটুক্তি কারীদের মৃত্যুদ- বাস্তবায়নে সংসদে আইন প্রণয়নের দাবি জানান বক্তারা।