কৃষি ব্যাংক থেকে ৯০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ছাগলনাইয়ার হরিপুর গ্রামে কালাম ডেয়ারি ফার্ম নামক একটি খামার করেন খামারি সহিদ উল্লাহ কালাম। ১৭০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৮ ফুট প্রস্থের শেডে গাভী ও বাচুরসহ মোট একশটি গরু পালন করে আসছিলেন তিনি। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বন্যার পানি স্পর্শ করেছে এ ডেইরি ফার্মের চালের টিন। উজান থেকে আসা পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় খামারি ও তার খামারে কর্মরত শ্রমিকদের পক্ষে কোন প্রকার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে বন্যার পানিতে এ খামারের ১২টি গাভী মারা যায় এবং ১০টি গাভী ও বাছুরের প্রাণ বাঁচাতে খামারি সহিদ উল্লাহ কালাম নিজেই গলা থেকে রশি কেটে দিয়ে বন্যার পানির স্রোতে ছেড়ে দেন। পানিতে নষ্ট হয়েছে খামারে থাকা একশ বস্তা গোখাদ্য। পঁচে বিনষ্ট হয়েছে একশ শতাংশ জমিতে লাগানো উন্নত জাতের ঘাস। বিকল হয়েছে খামারের সকল বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম।

খামারি কালাম দৈনিক ফেনীকে জানান, বন্যায় আমার চোখের সামনে গাভীগুলো মারা যাচ্ছে দেখে নিজেকে স্থির রাখতে পারিনি। পানিতে ভেসে গিয়ে হলেও প্রাণে বেঁচে থাকবে চিন্তা করে ১০টি গরুর গলা থেকে রশি কেটে নিজ হাতে আমি ছেড়ে দিয়েছি। এছাড়াও ১২ টি গাভী মারাগেছে। সব মিলিয়ে বন্যায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দাবি করে খামারি কালাম জানান, নিজের জমানো টাকা ও ব্যাংক থেকে ৯০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে খামারটি করেছিলাম। বন্যার আগে প্রতিদিন ২৭০/২৮০ লিটার দুধ পেতাম বর্তমানে মাত্র ৫০/৬০ লিটার দুধ পাই। 

ভয়াবহ বন্যায় সব কেড়ে নিয়েছে মন্তব্য করতে গিয়ে চরম হতাশাগ্রস্ত হৃদয়ে খামারি কালাম জানান, এখন কিভাবে সোজা হয়ে দাঁড়াব বুঝছিনা। ঋণের বোঝা কাঁধে নিয়ে পুনরায় খামার পরিচালনা করা অসম্ভব এমন মন্তব্য করে তিনি জানান, সরকারের পক্ষ থেকে খামার পরিচালনার জন্য আর্থিক সহযোগিতা পেলে হয়ত পুনরায় খামারটি চালাতে পারব।