দীর্ঘ প্রবাস জীবনের কষ্টার্জিত অর্থ, স্ত্রীর গহনা বিক্রির টাকা এবং আত্মীয়স্বজনদের নিকট থেকে ধারকর্জ করে নিজ গ্রাম ছাগলনাইয়ার পুর্ব শিলুয়ায় আবিদ পোল্ট্রি নামক একটি খামার তৈরী করেছিলেন আমির হোসেন পাটোয়ারী মিন্টু। ১৫৩ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪৩ ফুট প্রস্থ্য বিশিষ্ট খামারটিতে ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ষোল সপ্তাহ বয়সী সাত হাজার লেয়ার মুরগি তুলেন তিনি। ভয়াবহ বন্যায় তলিয়ে যায় মিন্টুর আবিদ পোল্ট্রি নামক খামারটি। ফলে ২৯ সপ্তাহ বয়সী সাত হাজার লেয়ার মুরগির সব গুলোই বন্যার পানিতে মারাযায়। নিমিষেই খামারি আমির হোসেন মিন্টুর স্বপ্ন ভঙ্গ হয়।
বন্যায় পানিবন্দী অবস্থায় খামারের খাঁচার ভেতর লেয়ার মুরগিগুলো মরে চারদিকে দূর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করে। বন্যার পানি কমতে থাকলেও মিন্টুর চোখের পানি কিছুতেই থামছে না। পানিবন্দী হয়ে তার খামারের সব গুলো মুরগি মারা যাওয়ার পাশাপাশি ব্যপক ক্ষতি সাধন হয়েছে ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত মুরগি রাখার খাঁচা ও ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত গ্যাস প্লানটি। নষ্ট হয়েছে খামারে রক্ষিত ৫১ বস্তা খাদ্য। বিকল হয়ে পড়েছে সকল আসবাবপত্র ও পানিতে তলিয়ে থাকা খামারের স্থাপনাটি।
গতকাল মঙ্গলবার খামারি মিন্টু তার খামার থেকে মৃত ও দূর্গন্ধযুক্ত মুরগিগুলো খামারের বাহিরে স্তুপ করে পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে পুড়ার কাজ সম্পন্ন করে। এসময় তিনি আহাজারি করে বলতে থাকেন নিজের স্বপ্ন নিজ হাতে আগুন দেয় পুড়তেছি আমি কত অভাগা।
খামারি আমির হোসেন মিন্টু দৈনিক ফেনীকে জানান, বন্যায় তার খামারের কোটি টাকার উপরে ক্ষতি হয়েছে। ব্যাংক কিংবা কোন এনজিও সংস্থা থেকে ঋণ না করলেও নিজের জীবনের সকল সঞ্চিত টাকা, স্ত্রীর গহনা বিক্রি এবং স্বজনদের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা ধারকর্জ নিয়ে তিনি এ খামার প্রতিষ্ঠিত করেন। বন্যায় খামারে কোটি টাকার উপরে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে তিনি জানান, এখন পৈত্রিক জায়গা জমি বিক্রি করে পুনরায় খামারটি চালু করতে পারলেও যাদের নিকট থেকে ধারকর্জ করে খামারটি চালু করেছিলাম তাদের টাকা পরিশোধ করার উপায় আমার নেই। খামারটি পুনরায় চালু করতে তিনি সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।