ফেনী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী মোঃ সফি উল্যাহ (৬০) খুনের ঘটনার মামলায় ফেনী জেনারেল হাসপাতালের সাবেক আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আবু তাহের স্বপনসহ আরও তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। আজ বুধবার (১১ নভেম্বর) জেলা ও দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালতে তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এ নিয়ে এ মামলায় ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। আসামীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট শরফুদ্দিন মাহমুদ মানিক সাক্ষীদের জেরা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) এডভোকেট হাফেজ আহম্মদ জানান, আজ দুপুরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের সাবেক আরএমও ডাক্তার আবু তাহের স্বপন, উত্তর লেমুয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আয়েশা আক্তার ও ঘটনাস্থলের সামনে অবস্থিত ফারুক স্টোরের মালিক ফারুক আহমেদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এই মামলার আসামী সোহেল হাওলাদারের বিচারের জন্য সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। এছাড়া এ মামলার অন্য আসামী রনি হাওলাদার, মেহেদী হাসান রাব্বি ও জাহিদুল ইসলামের বয়স কম হওয়ায় শিশু আদালতে তাদের বিচার করা হবে। আদালত সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে আগামী ২৩ নভেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করেছেন বলে জানান হাফেজ আহম্মদ।
এর আগে গত বুধবার (৪ নভেম্বর) আসামী সোহেল হাওলাদারের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী রেকর্ডকারী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ জাকির হোসাইন, সুরতহাল সাক্ষী জাফর আহম্মদ মজুমদার ও কনস্টেবল মোঃ আবদুল মতিনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এ নিয়ে এ মামলার বাদী নিহতের ছেলে আবদুল মোতালেব, জামাল উদ্দিন, জাকির হোসেন, আবুল হোসেন ও রাসেলসহ ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই হাবীবুর রহমান চৌধুরী এ মামলায় সোহেল হাওলাদারসহ ও তার ভাই রনি হাওলাদার, মেহেদী হাসান রাব্বি ও জাহিদুল ইসলামকে আসামী করে চলতি বছর ২৯ এপ্রিল আদালতে চার্জশীট প্রদান করেন। এ মামলায় ২০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ৩০ মে রাতে শহরের গাজী ক্রসরোডের হাসান আলী ভূঁঞা বাড়ির পাশে হক ম্যানশনে সফি উল্যাহকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে হত্যা করে দেড় ভরি স্বর্ণ ও নগদ ৫৫ হাজার টাকা লুট করে আসামীরা। পরদিন নিহতের ছেলে বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী উল্লেখে একটি হত্যা মামলা করেন।
সফিউল্যাহর গ্রামের বাড়ি সোনাগাজী উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের আলমপুরে। মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল এসআই মোঃ মাঈন উদ্দিন ভূঁইয়া’কে। এসআই মোঃ মাঈন উদ্দিন ভূঁইয়া এই মামলায় সন্দেহভাজন ৫ জনকে আটক করে। এসআই মোঃ মাঈন উদ্দিন ভূঁইয়া কবিরহাট থানায় বদলি হয়ে গেলে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় এসআই হাবীবুর রহমান চৌধুরীকে। এ মামলায় রাব্বি, রনি ও সাকিব অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট তৌহিদুল হক ও সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট জাকির হোসাইন এর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে সোহেল হাওলাদারের বিরুদ্ধে ৩০ সেপ্টেম্বর চার্জগঠন করেন জেলা ও দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছা। গত ১৩ অক্টোবর মামলার বাদী আবদুল মোতালেবের প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
সফি উল্যাহ দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে নৈশ প্রহরী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পরে সেখান হতে তাকে ফেনী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের বদলি করা হয়।