একদিনে সর্বোচ্চ ৪৩ জন শনাক্তের রেকর্ড গড়ে ফেনীতে করোনা রোগীর সংখ্যা একশ ছাড়িয়ছে। আজ শুক্রবার (২৯ মে) দুপুরে জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৩২ জনে।
স্বাস্থ্য বিভাগের প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী, নতুন শনাক্তকৃতদের মধে ১৮ জন দাগনভূঞার, ১৪জন ফেনী সদরের, ৮জন সোনাগাজীর, ১ জন করে ২জন পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ার বাসিন্দা। এছাড়া বাকী একজন ফেনী জেলার বাইরের বাসিন্দা। নোয়াখালীর আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ ল্যাব হতে প্রাপ্ত প্রতিবেদনে তাদের পজিটিভ এসেছে বলে জানানো হয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩৪১ নমুনা পরীক্ষার পর উল্লেখিত সংখ্যক রোগী শনাক্ত হন।
স্বাস্থ্য বিভাগের একটি সূত্র জানায়, ফেনী শহরে নতুন শনাক্তকৃতদের মধ্যে মাষ্টারপাড়ায়, ডাক্তারপাড়ায়, শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক, হাজারী রোডে, ধর্মপুর ও শর্শদী ইউনিয়নের বাসিন্দা রয়েছেন। এদের মধ্যে এক এলজিইডি কর্মচারী ও ব্যাংক কর্মকর্তাও রয়েছেন।
অন্যদিকে দাগনভুঞার আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে একই পরিবারের ৯ জনসহ বিভিন্ন গ্রামের আরও ৯ জন রয়েছেন।
সোনাগাজীতে নতুন শনাক্তকৃতদের মধ্যে মতিগঞ্জ ইউনিয়নের একই পরিবারের ৫ জন সদস্য রয়েছেন। এছাড়াও বগাদানা ইউনিয়নে বাবা ও তার তিন বছর বয়সী মেয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
এছাড়া ফুলগাজীর উত্তর দৌলতপুর সাহাপাড়া এলাকার ৫০ বছর বয়সী নারী নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।
ছাগলনাইয়ার মহামায়া ইউনিয়নের উত্তর যশপুরে আরও একজনের করোনা শনাক্ত করা হয়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ে দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার ডাঃ শরফুদ্দিন মাহমুদ জানান, এ পর্যন্ত ৫৩জন কোভিড-১৯ রোগী সুস্থ হয়েছেন। জেলায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৩জন।
শনাক্তকৃত সংখ্যার ভিত্তিতে ফেনীতে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে ফেনী সদর। এ উপজেলায় আজ পর্যন্ত ৪৩জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দাগনভুঞা উপজেলায়। এ উপজেলায় এ নিয়ে মোট ৩৭জন শনাক্ত হল। এরপরে রয়েছে সোনাগাজীতে ১৯জন, ছাগলনাইয়ায় ১৫জন, পরশুরামে ৮জন, ফুলগাজীতে ৫জন। এছাড়া আরও ৫জন রয়েছেন, যারা ফেনী জেলার বাইরের বাসিন্দা, ফেনীতে তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ফেনীতে চলতি মে মাসেই ১৩৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। গত ১৬ এপ্রিল জেলার ছাগলাইনাইয়া উপজেলায় এক যুবকের শরীরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। মাঝখানে আক্রান্তের হার সীমিত থাকলেও মে তে এসে তা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। গত ৯মে হতে ২৯ মে পর্যন্ত ফেনীতে ১২৬ জনের দেহে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে গত ১৬ মে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক ৩১জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়। এর আগে ১৬ এপ্রিল হতে ৯ মে পর্যন্ত ফেনীতে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা সীমাবদ্ধ ছিল ৭ জনে।
ফেনীতে এ পর্যন্ত একাধিক কোভিড শনাক্তকৃত রোগী নিজের মধ্যে করোনা উপসর্গ নেই দাবী করেছেন। বুধবার করোনা শনাক্ত দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন জানান, তিনি কোনোরকম শারীরিক অসুবিধা বোধ করছেন না। একইভাবে উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকসানা সিদ্দিকী, ছাগলনাইয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এনাম মজুমদার করোনা পজিটিভ হলেও অসুস্থ ছিলেন না। পরবর্তীতে পরপর দুই নমুনা পরীক্ষায় শেষ দুজনকে সুস্থ ঘোষণা করা হয়।