বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসছে। এ পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলায় ফেনীতে সরকারি সহায়তা বরাদ্দের চিঠি প্রাপ্তির কথা জানিয়েছেন ফেনী জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান। প্রাপ্ত বরাদ্দ প্রসঙ্গে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায় ১০০ টন চাল, ৪ লাখ টাকা এবং ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ফেনী জেলার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
ঘুর্ণিঝড়ে প্রস্তুতি বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব পর্যায়ে মিটিং সম্পন্ন হয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে, নির্ধারিত স্কুলগুলো আশ্রয়কেন্দ্রের আওতায় আনা হয়েছে। নারীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে। যথাসময়ে উপকূলীয় মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে আনা হবে। পাশাপাশি গবাদি পশু, হাস-মুরগী যতটা সম্ভব নিরাপদে সরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, সম্ভাব্য দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রযযোজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, উপকূলে মাইকিং চলছে। আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার পানি, খাবার ব্যবস্থা থাকবে।
সোমবার ফেনীর উপকূলীয় অঞ্চল সোনাগাজীতে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে বলে জানান সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অজিত দেব।
প্রস্তুতির বিষয়ে ইউএনও বলেন, উপজেলার ৫৬টি সাইক্লোন শেল্টারের ব্যবহার উপযোগী ৫২টি আশ্রয়দানের প্রস্তুতি চলছে। তবে উপকূলীয় চার ইউনিয়ন চর দরবেশ, চর চান্দিয়া, সদর ও আমিরাবাদে ২৫টি সাইক্লোন শেল্টার ও ৩৩টি স্কুল ঘর প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সব মিলে ২৫ হতে ৩০ হাজার মানুষকে আশ্রয় দেয়া যাবে। তবে করোনার কারনে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতে সোনাগাজী পৌর এলাকায় শেল্টারেও মানুষজন সরিয়ে আনতে হতে পারে বলেন জানান তিনি। তবে তা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে।
তিনি বলেন, স্বেচ্ছাসেবী সিপিপির টিম সকল ইউনিয়নে প্রস্তুত রয়েছে। ১১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ১০ হাজার মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় 'আম্ফান' পরিস্থিতি মোকাবেলায় দাগনভূঞা উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা ও করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধকল্পে উপজেলা রেসপন্স কমিটির জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রবিউল হাসান বলেন, ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে ও ওয়ার্ড কমিটিকে দ্রুত সভা করে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনীর উপ-পরিচালক তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী বলেন, ইতোমধ্যে ফেনীতে ৯০শতাংশ ধান কেটে ঘরে তোলা হয়েছে। বাকি ১০ শতাংশ ধান দুর্যোগের পূর্বে ঘরে তোলা যাবে।