প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়া ‘ইয়াসে’র প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট বেশি উচ্চতায় উপকূলে আছড়ে পড়ছে। বুধবার (২৫ মে) দুপুর নাগাদ উপকূল অতিক্রম করতে পারে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। ওই সময় পূর্ণিমা থাকায় জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
অধিদপ্তর বলছে, এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের গতিমুখ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার দিকে। তবে কোনো কারণে এর গতিপথ পাল্টে গেলে এটি উপকূলে বড় ধরনের আঘাত হানতে পারে। তবে ঝড়টি আইলা বা আম্ফানের মতো সুপার সাইক্লোনে রূপ নেওয়ার সম্ভাবনা নেই।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাটি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলা এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিসহ ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
পূর্ণিমার প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাটি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলাগুলোর নিন্মাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট বেশি উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে।
অধিদপ্তর বলছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে। দুপুর ১২টায় এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘণীভূত ও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বুধবার (২৬ মে) দুপুর নাগাদ উত্তর ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।