চট্টগ্রামের ভারতীয় হাই কমিশনের সহকারি কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী বলেছেন, কোন অপশক্তি ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান শ্বাশত বন্ধনকে ছিন্ন করতে পারবে না। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশীদের পাশাপাশি ভারতীয়রা প্রাণ বিসর্জন করে এক স্থায়ী বন্ধন রচনা করে গেছেন। এ বন্ধন ভবিষ্যতেও অটুট থাকবে।

আজ সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে ‘আইজিসিসি এইচসিআই-ক্লাসিক্যাল মিউজিক সিরিজ’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার, ভারতীয় হাই কমিশন ঢাকা, ভারতীয় সহকারি হাইকমিশন চট্টগ্রামের আয়োজনে এবং চট্টগ্রাম সংগীত ভবনের প্রযোজনায় এ শাস্ত্রীয় সংগীত সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়েছে।


বক্তব্যের শুরুতে অনিন্দ ব্যানার্জী বাঙালী জাতির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে নিহত সকল শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এসময় মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয়দের অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত গর্ববোধ করছি যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনী, জনগণ ও সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
বাংলাদেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ ১৯৭১ সাল থেকে অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছে। দুই দেশের অর্থনীতি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ৪৮ বছরে বাংলাদেশ সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে অনেক উন্নতি করেছে। বাংলাদেশের উন্নতিতে আমরা ভারতবাসীরা আনন্দিত।

 
অনিন্দ ব্যানার্জী বলেন, গত দুই বছরে আমারা বাংলাদেশীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতিকে সহজ থেকে সহজতর করার প্রচেষ্টা করে আসছি। আমরা এ অঞ্চলের জনগণের উপকারার্থে গত দুই বছরে কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভিসা সেন্টার খুলেছি। এতে নিশ্চয়ই আপনাদের অনেক উপকার হচ্ছে।
এ অনুষ্ঠানের আয়োজনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকের সাংস্কৃতিক সন্ধ্যাটি ভারত সরকারের পক্ষ হতে ফেনীবাসীর জন্য একটি উপহার।


অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত আমাদের এক কোটি মানুষকে আশ্রয় ও খাবার দিয়েছে, যুদ্ধে অস্ত্র ও সৈন্য দিয়ে সহযোগিতা করেছে। তাদের সহযোগিতায় আমরা মাত্র ৯ মাসের মাথায় স্বাধীনতা লাভ করেছি যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।


এসময় ভারত-বাংলাদেশ ভাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, ভারতের সাথে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চিরজীবন অটুট থাকবে।


এসময় তিনি জেলা সনাতন ধর্মালম্বীদের নিরাপত্তার বিষয়ে বলেন, ফেনীতে ১৫৫টি পূজা মন্ডপে আমরা সবসময় নিরাপত্তাসহ সবধরনের সহযোগিতা করে আসছি। ভবিষ্যতেও এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক শুকদেব নাথ তপনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান, পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বিকম, দাগনভ‚ঞা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সভাপতি দিদারুল কবির রতন, পরশুরাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদার, সোনাগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল আলিম মজুমদার, ফেনী পৌর মেয়র হাজী আলাউদ্দিন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন প্রমুখ।


অনুষ্ঠানে ফেনীর জেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এসময় আগত অতিথিদের ভারতীয় হাই কমিশনের পক্ষ থেকে উপহার প্রদান করেন অনিন্দ ব্যানার্জী।