ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপি বলেছেন, ফেনী অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ শেষ হলে ১৮ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে। ফেনীর মানুষকে অন্য কোথায় গিয়ে চাকরি করতে হবে না। গতকাল মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে ফেনী শিশু নিকেতন কালেক্টরেক্ট স্কুল প্রাঙ্গনে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
সংসদ সদস্য বলেন, ফেনীতে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ থাকলে আপনাদের সন্তানেরা এখানে পড়ালেখা করে বাপ-মায়ের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারতো। বিএনপি সরকারের আমলে ফেনীতে কোন উন্নয়ন হয়নি। তারা শুরু আওয়ামী লীগকে ঘায়েল করার চেষ্টা করেছে।
তিনি শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা শিক্ষার্থীদের নিজেদের সন্তানের মতো করে লেখাপড়া করাবেন। তাহলে এখান থেকে দেশের সেরা মেধাবী তৈরী হবে। বইয়ের বোঝা কমান। এসময় তিনি উপস্থিত মায়েদের উদ্দেশ্যে বলেন, মায়েরা যদি আন্তরিক না হয় কোন সন্তানই সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পারবে না। সন্তান সুপ্রতিষ্ঠিত করতে মায়েদের অবদান সবচেয়ে বেশী। শিক্ষকদের পাশাপাশি আপনারাও সন্তানদের খবর রাখবেন।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে নিজাম হাজারী বলেন, প্লে থেকে এসএসসি পর্যন্ত কোন শিক্ষার্থীর হাতে মোবাইল ফোন দিবেন না। তারা বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে আপনাদের মোবাইলে কথা বলবে। অতি আদরে হাতে মোবাইল ফোন দিয়ে তাদের সর্বনাশ করবেন না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের অনেকের ঢাকা-চট্টগ্রাম গিয়ে সন্তানেরা লেখাপড়া করানো সম্ভব নয়। আমি আমাদের সন্তানদের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে ফেনীতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ স্থাপনের আবেদন জানিয়েছি।
ফেনীর শিক্ষা সুবিধা বিষয়ে সাংসদ বলেন, ফেনী সরকারী কলেজে ১৮টি বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স চালু করেছি। ফেনীতে আর সন্ত্রাস ও অপরাজনীতি নয়, আমরা ফেনীতে শান্তিতে বসবাস করতে চাই।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান বলেন, ফেনীতে ভর্তি হবার জন্য ভালো কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। ফেনীর অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে এখানে শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক ভালো। এখানে শিক্ষকদের সবসময় নজরদারির মধ্যে রাখা হয়। সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষার ফলাফল সন্তোষজনক।
নিজাম হাজারী প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপারে কোন সুপারিশ করা হয়না। যোগ্যতার ভিত্তিতে ভর্তির জন্য নির্দেশ দেন। এতে আমাদের কাজও সহজ হয়ে যায়।

জেলা প্রশাসক মো: ওয়াহিদুজজামানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুমনী আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সুজন চৌধুরী, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সলিম উল্যাহ ও পৌর কাউন্সিলর সাইফুর রহমান সাইফু, বাহার উদ্দিন বাহার প্রমুখ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বিকম।

শিশু নিকেতন কালেক্টরেক্ট স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র জুলফিকার ও মাহেরুর যৌথ পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: শফিউল আলম। পরে অতিথিবৃন্দ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক রবিউল আউয়াল রবি জানান, মেধা ও ক্রীড়া দুটি ইভেন্টে ৫০০টি পুরস্কার প্রদান করা হয়।