প্রাথমিকের শিক্ষকদের ১৮ মাসব্যাপী ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) কোর্স অব্যাহত রাখার দাবিতে জেলাপ্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ পিটিআই কর্মকর্তা সমিতি (বাপিকস) ফেনী। গতকাল সোমবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মাসুদুর রহমান।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশে ৬৭টি পিটিআইতে ১৮ মাসব্যাপী ডিপিএড কোর্স চালু রয়েছে। পিটিআইতে কর্মরত পিটিআই ইন্সট্রাক্টররা দেশ-বিদেশ থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং তারা দীর্ঘদিন ধরে সফলতার সঙ্গে ডিপিএড কোর্স পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ডিপিএড কোর্স বন্ধ করে ৪-৬ মাস মেয়াদের স্বল্পমেয়াদি কোর্স চালু করার প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছে। এটি জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

বাপিকস’র আইন সম্পাদক ও ফেনী পিটিআই ইন্সট্রাক্টর মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেছেন, মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নের স্বার্থে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ যোগ্যতায় শিক্ষা বিষয়ক ডিগ্রি বাধ্যতামূলক না করা পর্যন্ত পিটিআইতে দীর্ঘদিন ধরে চলমান ও প্রতিষ্ঠিত ডিপিএড কোর্স চালু রাখতে হবে। অন্যথায় শ্রেণিকক্ষে গুণগত পাঠদানে ব্যর্থ হয়ে প্রাথমিক শিক্ষাখাত আরও হুমকির মুখে পড়বে।

তিনি বলেন, এটি কোনো প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে করা একদমই যৌক্তিক না। এটি যদিও পরিমার্জন করতে হয় তবে শিক্ষাবিদদের মাধ্যমেই করতে হবে।



বাপিকস’র সুপারিশসমূহ:
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রণীত জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষাক্রম-২০২১-এর আলোকে শুধু প্রথম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক রচিত হয়েছে, যা ২০২৩ সালে পাইলটিং করা হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তক রচিত হলে শিক্ষাক্রমের পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভবপর হবে। তাই পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তক রচিত হওয়ার পর ডিপিএড কারিকুলামকে তার আলোকে পরিমার্জন করলে তা বাস্তবসম্মত হবে।

শূন্যপদে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইন্সট্রাক্টর নিয়োগ করা প্রয়োজন। সেটি সম্ভব না হলে কর্মরত ইন্সট্রাক্টরদের সংখ্যা অনুযায়ী পিটিআইগুলোর ভর্তির আসন পুন:নির্ধারণ করা যেতে পারে।

ইতোপূর্বে ডিপিএড কোর্স সম্পন্নকারী শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণে তাদের বেতম কমে যাওয়ায় ডিপিএড কোর্সের প্রতি শিক্ষকদের নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে। ডিপিএড কোর্স শেষ হওয়ার পর একটি অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট দিলে শিক্ষকরা উৎসাহিত হবেন।

ডিপিএড কোর্সের মূল্যায়নবিষয়ক যে গবেষণাগুলো ইতোপূর্বে সম্পন্ন হয়েছে, তার প্রতিবেদনগুলো নিয়ে একটি পর্যালোচনা কর্মশালা আয়োজনের মাধ্যমে পিটিআইসহ প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারের সদস্যদের করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যেতে পারে।

পিটিআইগুলোতে আইসিটি ল্যাব ও ডিজিটাল ক্লাসরুম রয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ডিপিএড কার্যক্রমে অনলাইন, অফলাইন ও ব্লেন্ডেড মোডালিটি ব্যবহার করার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে আরও ফলপ্রসূ করা যেতে পারে।