দীর্ঘদিনের নীরবতা ভেঙ্গে উত্তপ্ত হয়ে উঠলো ফেনীর ট্রাংক রোড। সাম্প্রতিক সময়ে ভোলায় ছাত্রদল নেতা হত্যা ও জ্বালানী তেলসহ নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আজ শুক্রবার (১২ আগস্ট) দুপুর সাড়ে তিনটায় পূর্ব ঘোষিত সমাবেশ ছিলো বিএনপির।

কর্মসূচির আলোকে শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কে মিছিল করে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। উল্লেখিত সময়ের পূর্বে বিএনপির নৈরাজ্যের অভিযোগ তুলে ট্রাংক রোডে মিছিল করে ছাত্রলীগ। উভয় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে হামলা, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সূত্রপাত এখানেই।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক ও ইসলামপুর সড়কে অবস্থান নিয়ে পুলিশ ছররা গুলি ছোড়ে। প্রায় আধ ঘন্টাব্যাপী চলমান সংঘর্ষে শহরের প্রাণকেন্দ্রে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। বিকেল চারটা নাগাদ পুলিশ এবং পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী ট্রাংক রোডের যান চলাচল স্বাভাবিক করতে ভূমিকা নেয়।

বিএনপির শীর্ষ নেতাদের দাবি, হামলায় আহত হয়েছে তাদের অঙ্গ সংগঠনের ২৫ নেতাকর্মী। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল জানান, শহরের বড় বাজারের ইসলামপুর রোডে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির জন্য জড়ো হয় জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা অতর্কিতভাবে হামলা করে।

আলাল আরও জানান, হামলায় তাদের ২৫জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অন্যদিকে ফেনী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী বলেন, বিএনপি বরাবরই সন্ত্রাসী দল। তারা সব সময় এ জনপদে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এ ঘটনার সাথে কারা জড়িত তা সিসিটিভি ফুটেজে রয়েছে, তা দেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।


জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ তপু বলেন, ছাত্রলীগ কারোর ওপর হামলা করে নি। ছাত্রলীগ শান্তিপূর্ণ মিছিল করে ফিরছিল। এ সময় বিএনপির লোকজন শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কের বিভিন্ন দোকানে ইট-পাটকেলে নিক্ষেপ করে, ভাংচুর চালায়। তারা গুলিও নিক্ষেপ করে। এসময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষায় বিএনপির সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করে।

এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন জানান, বিএনপির সমাবেশ সংলগ্ন স্থানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০/১২ রাউন্ড গুলি ছোঁড়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ আহত হয়েছে কিনা এখন পর্যন্ত জানা যায় নি। ওসি জানান, এ হামলার ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

বিএনপির দাবী আহত যারা:
বিএনপি দাবী করেছে যুবদল কর্মী জিয়া, খুরশীদ, লিটন, ইমাম, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রতন, সদর উপজেলা যুগ্ম আহবায়ক জিয়া উদ্দিন, পৌর ছাত্রদলের সদস্য অর্পণ,মৎসজিবী দল নেতা শেখ আবদুল্লাহ, ছাত্রদল কর্মী রাজিব, শাকিব, জাহিদুল ইসলাম শামীম, ইসমাইল হোসেন, মিজানুর রহমান, আশ্রাফ সহ ২৫-৩০ জন নেতাকর্মী মারাত্মকভাবে আহত হয়।