পরশুরামে করোনা শনাক্তের হার ফের বাড়ছে। গত ২৮ জুন হতে ৬ জুলাই পর্যন্ত ৯ দিনে পরশুরামের ১৩৬টি নমুনা পরীক্ষায় ৭৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৫৪.৪১ শতাংশ। এ সময়ের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে উপজেলায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় পরশুরামের ২১টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে আরও ১১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। নমুনা অনুপাতে শনাক্তের হার ৫২ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এ নিয়ে উপজেলায় মোট শনাক্তকৃত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০৯ জনে। এ সময়ের ব্যবধানে আরও ৫ জন রোগী সুস্থ্য হয়েছে। এ নিয়ে মোট ২১০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ্য হয়েছেন বলে জানান স্বাস্থ্য বিভাগ। এছাড়া করোনা আক্রান্ত হয়ে উপজেলায় মোট ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

শনাক্তের হার বাড়ার কারণ প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আব্দুল খালেক দৈনিক ফেনীকে জানান, যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় সংক্রমণের হার বাড়ছে। তিনি বলেন, সংক্রমণের হার বাড়তে থাকলেও গ্রামে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করছে জনসাধারণ। এসময় করোনা সংক্রমণ বিস্তার রোধে উপসর্গ ব্যক্তিদের নমুনা পরীক্ষা করতে বলেন তিনি।

একই প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা: ইয়াছিন আলাউদ্দিন ডালিম বলেন, অসচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। তিনি বলেন, করোনার ডেল্টা ভেরিয়েন্টের কারণে এখন আক্রান্তদের অনেকের তেমন উপসর্গ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এজন্য সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এছাড়া আক্রান্ত রোগীদের শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা কমে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে অন্যত্র পাঠাতে হচ্ছে।

গত ২ সপ্তাহ ধরে করোনা উপসর্গ নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। তিনি বলেন, প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা প্রায় ৮০ শতাংশ রোগীই করোনার বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে আসছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ প্রদত্ত তথ্যমতে, এ পর্যন্ত পরশুরামে ৩০৯ জন রোগীর মধ্যে সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছে পৌর এলাকায়। শনাক্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থঅনে রয়েছে চিথলিয়া ইউনিয়ন। এরপরে রয়েছে মির্জানগর ও বক্সমাহমুদ ইউনিয়ন।

একই সূত্র জানায়, আজ পর্যন্ত পরশুরামে মোট সংগৃহীত ১৫৮২টি নমুনার মধ্যে ১৫৬০টির ফলাফল পাওয়া গেছে। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। শনাক্তকৃতদের মধ্যে ৪ জন বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে। এছাড়া ৮৭ জন স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৬ মে উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৪ জন সেবিকার দেহে প্রথম করোনা শনাক্ত করা হয়েছিল।