সোনাগাজীতে জায়গা নিয়ে বিরোধের জেরে করে তুলকালাম কান্ড ঘটেছে। এ ঘটনায় মামলা, হামলাসহ দুই প্রতিপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) সকালে পৌরসভার জিরো পয়েন্ট নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এক পক্ষ মানববন্ধন করতে গেলে অন্য পক্ষের সাথে সংঘর্ষে হলে ৬ নারীসহ অন্তত দশজন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের সোনাগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের দক্ষিন পুর্ব চরচান্দিয়া ওয়াপদা কলোনীতে ভূমি বিরোধের জেরে গত ১৭ এপ্রিল তাসলিমা আক্তার ও আকলিমা আক্তার নামের দুই গৃহবধুর ওপর হামলার অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় গত বুধবার আহত তাছলিমা আক্তার বাদি হয়ে সোনাগাজী উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির ও হাজী জিন্নত আলী সমাজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাওলানা কালিম উল্যাহকে প্রধান আসামী করে সাত জনের নামে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় অপর আসামীরা হলেন আলমগীর হোসেন, গোলাম মাওলা, মাইন উদ্দিন, জসিম উদ্দিন, বেলাল হোসেন, শাহাব উদ্দিন।

আহত গৃহবধু তাসলিমা অভিযোগ করে বলেন, মামলা দায়েরের পর জামায়াত নেতা কালিম উল্যাহ তাদের মামলা তুলে নিতে হুমকি ধামকি প্রদান করতে থাকে। এতে ব্যর্থ হয়ে তার সমর্থকদের উস্কানী দিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে লকডাউন উপেক্ষা করে মানববন্ধনের আয়োজন করে। ওই সময় আমি পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে জিরোপয়েন্টে হয়ে থানায় যাওয়ার সময় মানববন্ধনে উপস্থিত গোলাম মাওলা ও জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে আমাদের উপর হামলা করা হয়। তাদের হামলায় আমি সহ মোঃ রিয়াদ, রহমত উল্লাহ, রোকেয়া বেগম, আকলিমা আক্তার, রূপিয়া বেগম আহত হয়।

অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে জামায়াত নেতা কালিম উল্যাহ বলেন, চার বোনের একটি পরিবার পূর্ব চরচান্দিয়া গ্রামের বস্তিতে এলাকাবাসীর উপর অনেক দিন ধরে নানা অত্যাচার, মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষদের হয়রানি করছে। এর প্রতিবাদে তারা জোটবব্ধ হয়ে পৌরসভার জিরোপয়েন্টে মানববন্ধনের চেষ্টা করলে অভিযুক্ত তাসলিমা ও আকলিমা ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে পুলিশ ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে হামলা করে। তাদের হামলায় নুরুল আলম, আসমা আক্তার, আলাউদ্দিন, মাইন উদ্দিন, গোলাম মাওলা, আবু ইউসুফ আহত হয়েছে। লকডাউন উপেক্ষা করে কেন মানববন্ধন করেছেন এবং প্রশাসনের অনুমতি নিয়েছেন কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি নিশ্চিুপ থাকেন।

স্থানীয় কামাল উদ্দিন, গোলাম মাওলা জানান, অত্যাচারের বিষয়টি অবগত করে ফেনী পুলিশ সুপার, সোনাগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান, নির্বাহী অফিসার, অফিসার ইনচার্জ ও চরচান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে দোষীদের বিচার দাবি করেন তারা।

আহতদের মধ্যে মোঃ রিয়াদ, রুপিয়া বেগম, রহমত উল্লাহ, গোলাম মাওলা, জসিম উদ্দিন, রোকেয়া বেগম, তাসলিমা আক্তার ও আকলিমা আক্তার সোনাগাজী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

আহত সাবেক মেম্বার রোকেয়া বেগম জানান, ওই দুই গৃহবধু ও তাদের বয়োবৃদ্ধ মা রুপিয়া বেগম থানায় যাওয়ার সময় মানববন্ধন থেকে কালিমুল্যাহর সহযোগী গোলাম মাওলা ও জসিমগংয়ের নেতৃত্বে হামলা করা হয়।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, মানববন্ধন ও সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। সংঘর্ষের ঘটনায় কোন পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে বেড়িবাঁধ এলাকায় পুলিশের একটি দলকে পাঠানো হয়েছে।