কবিতায়-গানে কৃষ্ণচূড়া বসন্তের ফুল হিসেবে ধরা দিলেও মূলত এটা কিন্তু গ্রীষ্মের ফুল। দ্বিজেন শর্মা তাঁর নিসর্গ, নির্মাণ ও নান্দনিক ভাবনায় বলেছেন, বসন্তে কৃষ্ণচূড়া ফোটে না। আর ফুলের বাজারে কিন্তু কৃষ্ণচূড়া বিকোয় না।

বর্তমান করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারি লকডাউনে নিস্তব্ধ ফেনী শহরেও চলছে গ্রীষ্মকালের তাপদাহ। তার মাঝেই নীরবে লাল আগুনের আভা ছড়িয়ে স্বস্তির আভা ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া। শহরের বিভিন্ন সড়কে কৃষ্ণচূড়ার মনকাড়া গাছ নজর কাড়ছে মানুষের। সবুজ চিকন পাতার ফাঁকে ফাঁকে লাল লাল ফুল যেনো এতো অস্বস্তি আর দু:সংবাদের মধ্যেও কিছুটা মানসিক স্বস্তির বার্তা দিচ্ছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শহরের মডেল স্কুলের বিপরীতে ভূমি কার্যালয়, ফেনী মডেল থানা, শহীদ মিনার ও রাজনন্দিনী দিঘির পূর্ব পাড় সংলগ্ন কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো ফুলে ফুলে শোভিত হয়ে আছে। আবার অনেকে এ চোখ জুড়ানো দৃশ্য ছবিতে ধরে রাখার চেষ্টা করছে।

রাজনন্দিনী দিঘির পাড়ে আজিজুল হক নামে এক যুবক বলেন, বিকালে এখানে বসে গ্রীষ্মের বাতাসের সাথে কৃষ্ণচূড়ার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে অনেক আনন্দই লাগে।

কলেজ পড়ুয়া রিফাত হাসান নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্যরূপ অতুলনীয়। তবে বাজারের অন্যান্য ফুলের ন্যায় এ ফুল সমাজের সব স্তরে তেমন আকর্ষণীয় না। তিনি বলেন, বর্তমান অধিক নগরায়নের ফলে এসব গাছগুলো খুঁজে পাওয়াই কষ্টসাধ্য।

উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, কৃষ্ণচূড়া একটি বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। যার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া। এ গাছ চমৎকার পত্রপল্লব এবং আগুনলাল কৃষ্ণচূড়া ফুলের জন্য বিখ্যাত। এটি ফ্যাবেসি পরিবারের অন্তর্গত একটি গাছ, যা ‘গুলমোহর’ নামেও পরিচিত।

উইকিপিডিয়া তথ্যমতে, কৃষ্ণচূড়ার আদি নিবাস আফ্রিকা। বিদেশি গাছ হলেও দেশের আবহাওয়ায় বেড়ে উঠতে এটি বেশ উপযোগী। গাছের উচ্চতা ১২ মিটারের মত হয়। ফুল উজ্জ্বল লাল ও হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে। পাপড়িগুলো প্রায় আট সেন্টিমিটারের মতো লম্বা হয়।