ফেনী শহরের পশ্চিম ডাক্তার পাড়ায় স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে স্বামী মোঃ সালাউদ্দিনকে আটক করেছে ফেনী মডেল থানার পুলিশ। গতকাল সোমবার (৫ এপ্রিল) শহরের ডাক্তারপাড়ার হাজী ইমাম বক্স রোডের নিজ বাসা হতে তাকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আটক সালাউদ্দিন ওই সড়কের আড্ডা বাড়ির মৃত নুর নবীর ছোট ছেলে।

নির্যাতনের শিকার খাদিজা আক্তার শারমিন জানান, গত ২০১৭ সালের ২৭ জানুয়ারি পারিবারিকভাবে মোঃ সালাউদ্দিনের সাথে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শাশুড়ী আনোয়ারা বেগম ও স্বামীর বড় বোন আমেনা বেগম বিভিন্ন সময় খাদিজা আক্তার শারমিনের নামে স্বামীর কাছে অহেতুক বিচার দিতো। তাদের কারণে স্বামী স্ত্রী'র মধ্যে ঝগড়াঝাটি লেগে থাকতো। স্বামী সালা উদ্দিন মা-বোনের প্ররোচনায় প্রায়ই স্ত্রীকে মারধর করতো। শাশুড়ী-ননদি খাদিজাকে অপয়া মেয়ে বলে স্বামীর কাছ থেকে দূরে রাখতে চাইতো। সর্বশেষ এ বছরের ২২ ফেব্রুয়ারী তাদের একমাত্র সন্তান সুমাইয়া আক্তার সায়মা (৩) কে আমেনা বেগমের ঘরে আহত হয়। তার মাথা কেটে রক্ত ঝরতে থাকে। আমি এর প্রতিবাদ জানালে তারা আমাকে মারধর করে। 

খাদিজা আরও জানান, সালাউদ্দিন প্রায়ই নেশা করে ঘরে আসতো। এলাকার সাবেক কাউন্সিলর ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। তারা আমার তিন বছর বয়সী বাচ্চার মাথায় মারাত্মক জখম করেছে৷ আমার শাশুড়ী এবং ননদ আমাকে ডিভোর্স দিতে আমার স্বামীকে পরামর্শ দেয়। সে তাদের কথামতো আমাকে ডিভোর্স দেয়ারও ধমক দিতে থাকে। শশুর বাড়ির লোকদের এমন নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানানো হয়। তারা গতকাল বিষয়টির সমাধান করার জন্য সালিশে বসলে সেখানে আমার স্বামী কাউকে তোয়াক্কা না করে সালিশদারদের গালিগালাজ ও হুমকি-ধামকি দিতে থাকে। মুরুব্বীরা তাকে এসব করতে মানা করলে আমার স্বামী ও ননদ ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ওপর চড়াও হয়। পরে এলাকাবাসী তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

ফেনী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ওমর হায়দার জানান, এ ঘটনায় গতকাল বিকালে ওই মহিলা বাদী হয়ে তার স্বামী শাশুড়ী, ননদ ও এক ভাসুরকে আসামি করে থানায় মামলা করেছে। অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।

সালাউদ্দিনের ভাই জামাল উদ্দিন বলেন, আমরা চার ভাই একই বাড়িতে থাকলেও যে যার সংসার নিয়ে আলাদা থাকি। তাদের স্বামী-স্ত্রীর বনিবনা হয়না তার দায় পুরো পরিবার কেন নেবে। তবে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে এমন করা ঠিক হয়নি। আমরা তার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।

সালাউদ্দিনের প্রতিবেশী মামুন জানান, তাদের দুজনের ঝামেলা মীমাংসা করতে এর আগেও বহুবার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কেউ কারো কথা শুনতে চায় না। তাদের কারণেই পারিবারিক কলহ সামাজিক কলহে রূপ নিয়েছে।

স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর জনপ্রতিনিধি খালেদ খান বলেন, গতকাল তাদের বিষয়টি সমাধানের জন্য বসলে সালাউদ্দিন ও তার বোন আমেনা খারাপ আচরণ করে। এসময় সালিশদারদের উপর চড়াও হয় দুই ভাই বোন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বিয়ের পর থেকেই সালাউদ্দিন ও তার পুরো পরিবার খাদিজার সাথে অন্যায় আচরণ করে আসছে।