বিশেষ প্রতিবেদক
ফেনীতে করোনাভাইরাস প্রতিষেধক নিতে নিববন্ধন করেও প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ টিকা নিতে আসেননি। নিববন্ধন করেও টিকা না নেয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগ বিব্রতবোধ করছে। বুধবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. এসএসআর মাসুদ রানা।

ডা. মাসুদ রানা জানান, টিকা পেতে এ পর্যন্ত ফেনীতে নিববন্ধন করেছেন ৫৯ হাজার ৮১০ জন। ভ্যাকসিন নিয়েছে ৪৮ হাজার ৯০১ জন। নিবন্ধন করেও টিকা নিতে বুথে আসেননি ১০ হাজার ৯০৯ জন।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, মোট টিকা গ্রহীতার মধ্যে ৩০ হাজার ৭২০জন পুরুষ এবং ১৮ হাজার ১৮১জন নারী। টিকা গ্রহীতা ২৬ জনের মধ্যে সাধারণ পাশর্^ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল।

নিবন্ধনকৃত ব্যক্তিদের তাগাদা দিতে ইতোমধ্যে একাধিক সভা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। ডা. মাসুদ রানা জানান, করোনা ভ্যাকসিন কমিটি, করোনা প্রতিরোধ কমিটি ও জেলা সমন্বয় সভাতেও বিভিন্নভাবে টিকা গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের তৃণমূল অর্থাৎ কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যায়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নিবন্ধনকৃত ব্যক্তিদের দ্রুত টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করতে বলা হয়েছে। নির্ধারিত বয়সের এখনো যারা নিবন্ধন করেনি তাদের তাগাদা দিতে বলা হয়েছে।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালে টিকা নেয়ার জন্য নিবন্ধন করেও টিকা নেননি শামীমা আক্তার নামে একজন সমাজকর্মী। তিনি জানান, ১৫ ফেব্রুয়ারি বুথে গিয়ে টিকা নেয়ার কথা থাকলেও পরিবারের অন্য কেউ নিবন্ধন না করায় আর যাওয়া হয়নি।

করোনায় সামনের সারির যোদ্ধাদের অগ্রাধিকার দিয়ে সরকারের পক্ষ হতে টিকা গ্রহণের কথা বলা হয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এমন অনেকেই সুযোগ থাকা স্বত্ত্বেও টিকা গ্রহণ করেননি।

নিবন্ধন করেও টিকা না নেয়া প্রসঙ্গে ফেনীতে কর্মরত এক গণমাধ্যমকর্মী জানান, কিছুটা অলসতা কিছুটা ভয় মিলে টিকা নেয়া হয়নি। তবে শীঘ্রই নেবেন বলে তিনি জানান।

ডা: মাসুদ রানা জানান, টিকা না নেয়া এবং যারা নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হননি তাদের সম্পৃক্তে ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সাথে আলোচনা করেছি। প্রয়োজনে বিভিন্ন বাজার কমিটির সভাপতি-সম্পাদককে যুক্ত করার জন্য বলেছি। এছাড়াও জেলার সভা হতে প্রচার প্রচারণা বাড়তে জেলা তথ্য অফিসকে বলা হয়েছে এবং পৌরসভাকেও প্রচার প্রচারণা বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি হতে করোনা টিকা দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। একই মাসের প্রথম দিন হতে সুরক্ষা এ্যাপস্ এর মাধ্যমে নিবন্ধন শুরু হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, টিকা কার্যক্রমের শুরুতে জেলায় মোট ১৯টি বুথ স্থাপন করা হয়েছিল। এরমধ্যে ২৫০ শয্যার ফেনী জেনারেল হাসপাতালে আটটি, পাঁচটি উপজেলায় দুইটি করে ১০টি ও ফেনী পুলিশ লাইনে একটি বুথ স্থাপন করা হয়েছিল। টিকাদান কার্যক্রমের জন্য ৩৫জন চিকিৎসক, ৬জন করে ২৪টি দলে মোট ১৪৪ জন টিকাদানকারী নিয়োজিত করা হয়েছিল।