দাগনভূঞা জাতীয় ভোটার দিবসে স্মার্ট কার্ড জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২ মার্চ) সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গনে বেলুন উড়িয়ে এর উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো: ওয়াহিদুজজামান।

এ উপলক্ষ্যে ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সভায় বক্তব্য প্রদানকালে জেলা প্রশাসক বলেন, আপনারা যারা ১৮ বছর পার করেছেন অবশ্যই ভোটার হবার জন্য আবেদন করবেন। শুধু ভোট দেয়ার জন্য এ স্মার্ট কার্ড নয়। ভবিষ্যতে আপনি স্মার্ট কার্ড ছাড়া অফিসিয়াল থেকে শুরু করে অনেক কাজ আপনি করতে পারবেন না।

অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার কথা তুলে ধরে জেলা প্রশাসক বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে বাংলাদেশ। আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পূর্ণ যোগ্যতা অর্জন করেছে। এ অর্জন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের কারণে হয়েছে। এ অর্জন প্রধানমন্ত্রীর পরিশ্রম, পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টার ফল।
এসময় দেশকে ভালোবেসে এগিয়ে নিতে উপস্থিত সকলের প্রতি আহ্বান জানান মো: ওয়াহিদুজজামান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার তানিয়ার সভাপতিত্বে ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) গাজালা পারভিন রুহীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ দিদারুল কবীর রতন, পৌর মেয়র মেয়র ওমর ফারুক খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মাঈনুল ইসলাম, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন পাটওয়ারী, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ ইমতিয়াজ আহমেদ প্রমুখ।

বক্তব্যে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, একটি মহল প্রায় বলে থাকেন ইভিএমএ মেশিনে নাকি ত্রুটি আছে। ভোট এক মার্কায় দিলে নাকি অন্য মার্কায় চলে যায়। একজনের আঙ্গুলের ছাপের সাথে অন্য কারো আঙ্গুলের ছাপের মিল খুঁজে পাবেন? প্রশ্ন করেন তিনি। এসময় ইভিএম নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর অনুরোধ করেন তিনি।

জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, আপনি আপনার এনআইডি অথবা স্মার্ট কার্ড দিয়ে মোবাইল সীম কিনতে গেলে খেয়াল রাখবেন আপনার হাতের আঙ্গুলের একাধিকবার ছাপ নিয়ে একাধিক সীম রেজিস্ট্রেশন করে ফেলছে আপনার নামে। দেশে এখন অহরহ এসব ঘটনা ঘটছে। আপনার নামে সীম অন্য কেউ ব্যবহার করছে। এ বিষয়ে নিয়ে সর্তক থাকবেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাচন অফিসের সংশ্লিষ্ট সকলকে সুন্দর আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান ইউএনও। এসময় তিনি বলেন, ‘বয়স যদি আঠারো হয়-ভোটার হতে দেরি নয়’ এ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে যাদের বয়স আঠারো অবশ্যই ভোটার হবেন এটা আপনার নাগরিক দায়িত্ব।

অনুষ্ঠানে জনপ্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা, গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। এসময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মাঝে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণের মধ্য দিয়ে কার্যক্রমের উদ্বোধন করে অতিথিরা।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, ১ লাখ ৭৪ হাজার ৮১৪ জন ব্যক্তির মাঝে স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে। প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার করে বিতরণ কাজ পরবর্তী ৫৮ কার্যদিবসে সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। ২০১৬ সাল পর্যন্ত যারা জাতীয় পরিচয় নিয়েছেন এবং ২০১৯ সালে নিবন্ধিতদের একটি অংশ স্মার্ট কার্ড পাবেন। তবে ২০১৬ সাল পর্যন্ত নিবন্ধিতদের আইরিশ ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে হবে। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে নিবন্ধিতদের স্মার্টকার্ড পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে বলে জানান তিনি।