মাত্র কয়েকদিন আগে মায়েদের সাথে নানার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল জান্নাতুল ইসলাম আয়েশা (২) ও দেড় বছর বয়সী তাসমিয়া জান্নাত নামে দুই কন্যা শিশু। সম্পর্কে তারা খালাত বোন। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে বাড়ির উন্মুক্ত পানির ট্যাংকে পড়ে একসাথে মারা গেছে দুজন। ফেনী সদরের পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম বিজয় সিংহ এলাকায় বিডিআর আবুল কালাম আজাদের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আয়েশার বড় ভাই মাদ্রাসা পড়ুয়া আশরাফুল ইসলাম (১৫) জানায়, তারা দুজন সকালে ঘরের ভেতরে খেলছিল। আমার আম্মু আমার বোনকে চিপস খেতে দিয়েছিলম, তখন তারা দুজন একসাথে ছিল তখন। আম্মু ঘরের কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলে তারা দুজন ঘর থেকে বের হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর তাদের ঘরের ভেতর না পেয়ে আমরা খোঁজাখুঁজি শুরু করি। ঘরের ভেতর এবং ছাদে না পেয়ে বাড়ির পাশের লাগোয়া পানির ট্যাংকে ওদের দুজনকে ভেসে থাকতে দেখে আমার আরেক ছোট বোন জান্নাতুল ফেরদৌস দিবা চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে। এরপর আমরা ঘর থেকে বের হয়ে দেখি তারা পানিতে ভাসছে। তখনই তাদের উদ্ধার করে আমরা ফেনীর জেড ইউ মডেল হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।

আয়েশার বড় বোন জান্নাতুল ফেরদৌস দিবা (৬) জানায়, আমার বোনেরা ঘরের ভিতরে ছিল। কিছুক্ষণ পর ওদের দেখতে না পেয়ে আমি বাড়ির বাইরে আছে কিনা দেখতে যাই। হঠাৎ করে ঘরের পাশে পানির ট্যাংকিতে দুজনকে ভাসতে দেখি এবং চিৎকার দিলে ঘর থেকে আমার আম্মু, খালামণি, নানু-নানী ছুটে আসে তাদেরকে পানি থেকে উঠায়।

আয়েশার পিতা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমার এক ছেলে ও তিন মেয়ে। আয়েশা সবার ছোট। গত কয়েকদিন আগে তার মায়ের সাথে একই এলাকার পশ্চিম বিজয় সিংহের নানার বাড়িতে বেড়াতে আসে।

প্রতিবেশীরা বলেন, বাড়ির পাশের পানির ট্যাংকিতে পানি বেশি ছিল না। অল্প পানিতে পড়ে দুটি শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নেয়া যায় না।

একই সাথে দুজনের মর্মান্তিক মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া বিরাজ করছে। পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। আজ বিকালে নিজ নিজ পারিবারিক করবস্থানে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

আয়েশা একই এলাকার শফি ড্রাইভারের নতুন বাড়ির ফখরুল ইসলাম ও আমেনা বেগমের মেয়ে। জান্নাত ফাজিলপুর ইউনিয়নের কলাতলী গ্রামের এরশাদুল ও তাসলিমা সুলতানার মেয়ে।