২৩টি ভিন্ন স্টলে সাজানো হয়েছে নানা ধরনের মুখরোচক ও লোভনীয় খাবার। সাজসজ্জা ও পরিবেশনায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে চলছে মৌন প্রতিযোগিতা। এ খাবারগুলো কোন রেস্টুরেন্টে বানানো হয় নি। ঘরে বসেই নিজ হাতে তা তৈরি করেছেন ফেনীর মেয়েরা। নিজের অবসর সময়কে কাজে লাগানোর পাশাপাশি সৃজনশীলতার প্রকাশের চেষ্টা।
অনলাইন আড্ডাকে কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা হয়ে উঠছেন ফেনীর মেয়েরা। ঘরে বসেই অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন অনেকে।

আজ বুধবার (২৫ নভেম্বর) শহরের মিজান রোডের ক্রাউনওয়েস্ট রেস্টুরেন্টে ‘ফেনীর মেয়েদের আড্ডা’ ফেইসবুক গ্রুপটির উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে কেক ও ফুড ফেস্টিভ্যালের। এতে নিজের উৎপাদিত বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী নিয়ে অংশ নেয় গ্রুপের ২৫জন সদস্য।

গ্রুপের এডমিন আফরোজ আহম্মেদের পরিচালনায় ফেস্টিভ্যালে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আলমগীর হোসেন, ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) ওমর হায়দার।

ওসি আলমগীর হোসেন এ ব্যতিক্রমী আয়োজনের প্রশংসা করে বলেন, আমাদের ফেনীর বোনেরা, মেয়েরা ঘরে বসে বিভিন্ন পোশাক, সাজসজ্জার অলংকার ও মুখরোচক বিভিন্ন রকমের খাবার তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করে আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর হচ্ছেন। তাদের এমন প্রচেষ্টা সত্যিই প্রশংসনীয় ও অনুসরণীয়।

এসময় অনলাইনে সততার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করতে উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া অনলাইনে কোন ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়লে পুলিশকে অবহিত করতে বলেন। অনলাইনে নারীদের সতর্ক ও সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে নিরাপত্তা ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

আফরোজা আহম্মেদ জানান, ফেনীর মেয়েরা ফেইসবুক ব্যবহার করে পোশাক, সাজসজ্জা সামগ্রী, হাতের তৈরী বিভিন্ন রকমের পিঠা কেক নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক কিছু অনলাইনের মাধ্যমে কেনাবেচা করছেন। ফেনীর মেয়েদের আড্ডা গ্রুপের মাধ্যমে তারা নিজেদের প্রকাশ করতে পারছেন। পরস্পরের সাথে সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে। আমাদের গ্রুপের সদস্যরা নিজেদের তৈরি পিঠা ও মুখরোচক খাবার নিয়ে আজকের ফেস্টিভ্যালে অংশ নিয়েছেন।

মেলায় ঘুরে দেখা যায় স্টলগুলোতে বিভিন্ন রকমের পিঠা, পায়েস, কেক সাজানো। যারা স্টল দিয়েছেন তাদের প্রত্যেকে ব্যক্তিগত পেইজের মাধ্যমে পণ্য বা খাবার বিক্রি করে থাকেন।

মেলায় এক অংশে দেখা যায় তিন বোন এক স্টল। হরেক রকম, রাখি'র রসুই ঘর, আফরিন্স নামে তিন বোনের তিনটি ফেইসবুক পেইজ রয়েছে। তারা জানান, করোনার শুরু থেকে অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে আমরা তিনবোন কেক তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি শুরু করি। অনলাইন অর্ডারের মাধ্যমে আমরা কেক সরবরাহ করে থাকি।

শখের হাট বাজার নামক একটি স্টলের মালিক কামরুন নাহার জানান, আমরা আমাদের শখের হাট বাজার পেইজের মাধ্যমে গ্রামীণ ঐতিহ্যের খাদ্য সামগ্রী বিক্রি করে থাকি। শহরে বসেই যে কেউ তার পছন্দের পিঠা, আচার বা কোন খাবার অর্ডার করলে আমরা সরবরাহ করে থাকি।

দিনব্যাপী মেলা শেষে সন্ধ্যায় গানের আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়।