ফেনীতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহের উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ১০টায় ফেনীর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স’র আয়োজনে সপ্তাহের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান।

‘প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা প্রস্তুতি দুর্যোগ মোকাবেলায় আনবে গতি’ এ প্রতিপাদ্যে শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কের ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে আয়োজিত অনুষ্ঠান শুরুতে  অগ্নি নির্বাপণ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন দুর্যোগে উদ্ধার কাজের মহড়া প্রদর্শন করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রম বর্তমান সরকারের অধীনে অনেক উন্নত হয়েছে। বাংলাদেশে এখন উপজেলায়ও ফায়ার স্টেশন হয়েছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, এখন আগুন লাগলে মানুষ ফায়ার সার্ভিসকে দেখলে ছবি তুলে। ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা না করে ছবি নিয়ে ব্যাস্ত থাকে। তাই তিনি সবার মন মানসিকতার পরিবর্তন করার আহবান জানান। এছাড়াও ফায়ার সার্ভিসকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেবার জন্য অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা ও চিকিৎসকসহ অন্যান্য বিষয় যুক্ত করার পরামর্শ দেন। ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রমে জেলা প্রশাসনের পক্ষ সহযোগিতা করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফেনী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বিকম বলেন, মানুষ যখন সর্বোচ্চ বিপদে পড়ে তখন সবার আগে ফায়ার সার্ভিস মানুষের কাছে পৌঁছায়। তিনি বলেন, ফেনীতে এখন বড় বড় বিল্ডিং হচ্ছে কিন্তু ফেনী ফায়ার সার্ভিসের জনবল কম। তিনি জনবল বাড়িয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের আন্তরিকভাবে কাজ করার আহবান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, দুর্যোগে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস একে অপরের পরিপূরক। দুর্যোগে অনেক সময় পুলিশ না গেলে ফায়ার সার্ভিস কাজ করতে পারেনা। আবার ফায়ার সার্ভিস না গেলে পুলিশ কাজ করতে পারেনা। যে কোন প্রয়োজনে পুলিশ ফায়ার সার্ভিস পাশে থাকবে বলে জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতি ফেনী ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের উপ সহকারি পরিচালক পূর্ণচন্দ্র মূৎসুদ্দী কার্যক্রমের বিবরণ দেন। তিনি জানান, ফেনী ফায়ার সার্ভিস বিগত ১ বছরে ৩৮৪টি অগ্নি ও ৫৬৪টি সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনায় উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছে।

উপ সহকারি পরিচালক জানান, ফেনীতে প্রতিদিন অপরিকল্পিতভাবে দালানকোঠা গড়ে উঠছে। বহুতল ভবনগুলোতে আন্ডারগ্রাউন্ডে পানির ব্যবস্থা থাকেনা। ফলে আগুন লাগলে তা নিভাতে বেগ পেতে হয়। তিনি জানান, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে এ বছর সীমিত পরিসরে এ সপ্তাহ পালন করা হবে। আমরা শহরের বিভিন্ন জায়গায় মানুষকে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করবো।

ফায়ার ম্যান মোঃ জানে আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ফেনী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ওমর হায়দার, ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স স্টেশন ফেনীর সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু সায়েম মাসুমসহ ফায়ার সার্ভিস অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, যুব রেড ক্রিসেন্ট ফেনী জেলা ইউনিটের সদস্য, ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একটি দল ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সপ্তাহ উপলক্ষ্যে গাড়ি বহর নিয়ে ফেনীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়।