মাঠ প্রশাসনে কর্মরত ১১-১৬ গ্রেডের কর্মচারীদের পদ পদবী ও বেতন গ্রেড উন্নীতকরণের দাবিতে ফেনীতে আন্দোলনে নেমেছে বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারি সমিতি (বাকাসস) এর ফেনী জেলার সদস্যরা। সংগঠনের জেলা সভাপতি মোঃ জাইনুল আবেদীন জানান, বাকাসস কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বুধবার (১৮ নভেম্বর) চতুর্থ দিনের মত কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। ১৫ হতে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এ কর্মবিরতি পালন করা হবে।

তিনি জানান, সারাদেশের ন্যায় ফেনীতেও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় এবং সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ের কর্মরত কর্মচারীরা এই কর্মসূচি পালন করছেন। সকাল ৯টা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে স্ব স্ব অফিস প্রাঙ্গণে অবস্থান নিচ্ছেন তারা। বিকাল ৫টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে।

সভাপতি জানান, জেলায় মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন কার্যালয়ের ১১-১৬ গ্রেডে ১৬০ জন কর্মচারী রয়েছে। অনেক কর্মচারী ৩৩ বছর চাকুরী করে পদোন্নতি না পেয়ে মৃত্যুবরণ করেন। আবার অনেকে একই পদে চাকুরী করে পদোন্নতি না পেয়ে স্বেচ্ছায় অবসরগ্রহণ করেছেন। ফলে নবীন কর্মচারীগণ কাজকর্মে কর্মস্পৃহা হারিয়ে ফেলছে।

জাইনুল আবেদীন জানান, একই যোগ্যতা নিয়ে সচিবালয়ে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক হিসেবে চাকুরীতে যোগদান করেন মাত্র ৫বছরের ব্যবধানে তারা প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে থাকে এবং ধারাবাহিকভাবে সহকারী সচিব (নন-ক্যাডার); সিনিয়র সহকারী সচিব (নন-ক্যাডার) এবং উপ-সচিব (নন-ক্যাডার) হিসেবে পদোন্নতি পান। অথচ মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীগণ সচিবালয়ের কর্মচারীদের থেকে অধিক দায়িত্বশীলতা ও কর্মদক্ষতার পরিচয় দিলেও পদোন্নতির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়।

তিনি জানান, ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী আমাদের পদ পদবী ও বেতন গ্রেড উন্নত করার অনুমোদন দিয়েছিলেন। সেটি বাস্তবায়িত হয়নি। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত ডিসি সম্মেলনের প্রধান এজেন্ডা ছিল এটি। সে সময় আমাদের আশ্বাস প্রদান করা হয়েছিল। পরবর্তীতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আমাদের দাবি উত্থাপন করা হলেও সেটি আজও বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। তাই দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বাকাসস কেন্দ্রীয় কমিটি। আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করব আমরা। এরপর দাবি আদায় না হলে আগামী ৫ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করা হবে।

জাইনুল আবেদীন বলেন, আমি ২০০০ সালে এ পদে এ যোগদান করি। চাকরীর কাল ২০ বছর পার হলেও কোন প্রকার পদোন্নতি ও সুযোগ সুবিধা পাইনি।

এদিকে কর্মচারীদের কর্মবিরতিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবা নিতে আসা গ্রহীতারা। মাঠ প্রশাসনের দৈনন্দিন কাজকর্মে বিরাজ করছে স্থবিরতা।

এ ব্যাপারে ফেনী জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান জানান, কর্মচারীরা পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করলে গুরুত্বপূর্ণ দাপ্তরিক কার্যক্রমসহ জনগণের প্রাপ্য সরকারি সেবাদান ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হতে পারে। তিনি জানান, তাদের দাবির বিষয়ে অবহিত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বরাবরে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে।