শহীদ মেজর সালাহ্উদ্দিন মমতাজ বীর উত্তম উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত ১০জন শিক্ষকে সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার (৬ নভেম্বর) সকাল ১০টায় বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিষদের আয়োজনে স্কুল মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ফেনী জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল করিম।

চেয়ারম্যান বলেন, শিক্ষকদের জন্য এমন আয়োজন সত্যি প্রশংসনীয়। শিক্ষকরা আমাদের জাতি গড়ার কারিগর। সব থেকে সম্মানিত তারা। তিনি বলেন, সবারই একদিন বিদায় নিতে হয়। বিদায় অনেক কষ্টের। কিন্তু বিদায়ী শিক্ষকদের জন্য এমন আয়োজন অনেক বেশী সম্মানের।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরীন সুলতানা বলেন, এমন একটা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারাটা আমার জন্য সৌভাগ্যের ব্যাপার। তিনি বলেন, একটি বিদ্যালয়ের জন্য প্রাক্তন পরিষদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্কুলের উন্নয়নের জন্য সবাইকে একসাথে কাজ করার আহবান জানান তিনি।

সংবর্ধনাপ্রাপ্ত স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক রুহুল আমীন ভুঞা বলেন, আমি আমার শিক্ষকতার জীবনে যা সম্মান পেয়েছি এই সালাহ্ উদ্দিন স্কুলের কল্যাণে। তিনি বলেন, আমার মত একজন নগন্য প্রধান শিক্ষক এমন সম্মান পেত না, যদি সালাহউদ্দিন স্কুলের মত এমন স্কুলের প্রধান শিক্ষক না হতাম। তিনি বলেন, এই স্কুলের কারণে আমি দেশের প্রধানমন্ত্রীদের সাথে সরাসরি দেখা করার সুযোগ পেয়েছি৷ এই সময় তিনি স্কুলের উন্নয়নে অবদান রাখায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়াও শিক্ষকদের সম্মান জানানোর জন্য এমন উদ্যোগ গ্রহন করায় প্রক্তন পরিষদকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির আহবায়ক এম সাইফুদ্দিন রুমপ বলেন, আমরা যাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে মানুষ হয়েছি সে শিক্ষকবৃন্দ কে শ্রদ্ধা জানাতে আমাদের এই আয়োজন। আমাদের শিক্ষক যারা আমাদের থেকে বিদায় নিয়েছেন আমরা তাদের বিদায়ী সংবর্ধনা দিতে স্কুলের সকল ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়েছি।

তিনি বলেন, এই দিনটি আমাদের জন্য অনেক আনন্দের। আজকে আমাদের একটি মিলনমেলা হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আগামী ২০২৩ সালে বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠিত হবে। তিনি সবাইকে একসঙ্গে কাজ করে একসাথে থেকে স্কুলের সুবর্ণজয়ন্তী আয়োজন করার আহবান জানান।

বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ঢাকা মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইবুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক শামীম আক্তার, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি তৌহিদ রেজা নুর মাসুদ, বিদায়ী সংবর্ধনা পাওয়া শিক্ষকবৃন্দ, প্রাক্তন শিক্ষার্থী ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন শামীমসহ বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

মানপত্র পাঠ করেন বিদ্যালয়ের ৯৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী আজম খান।

১৯৯৯ ব্যাচের সাহানা আক্তার মুন্নি ও আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ইয়াছিন আরাফাত রাজুর যৌথ সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ফেনী পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুজিবল হক সহ বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষকবৃন্দ, বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীবৃন্দ।

উল্লেখ্য বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রুহুল আমিন ভূঞা, গোলাম মাওলা খোন্দকার,ওবায়দুল হক বিএসসি,রৌশন আরা বেগম, স্বপন কুমার নাগ, ননী গোপাল পাল,মৌলভী ছায়েদুল হক,নুরুল আমিন মজুমদার (শাহজাহান), ননী গোপাল বৈদ্য এয়ার আহম্মদকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেয় বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিষদ।

যার মধ্যে নুরুল আমিন মজুমদার (শাহজান), মৌলভী ছায়েদুল হক, এয়ার আহম্মদ মরোণত্তর সংবর্ধনা পান। এছাড়াও যার নামে বিদ্যালয় শহীদ মেজর সালাহ উদ্দিন মমতায় বীর উত্তমকেও মরোণত্তর সংবর্ধনা দেয় বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিষদ।

আলোচনা সভার পরে দুপুরের বিরতির পর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র‍্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়।