ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রগতিশীল জোটের সমাবেশে সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান, উস্কানী এবং ফেনী-২ আসনের সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারীর ফেস্টুনে আপত্তিকর মন্তব্য লেখায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ফেনী জেলা ছাত্রলীগ।

আজ শনিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটায় শহরের একটি রেস্টুরেন্টে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্র সংগঠনটি। সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাহ উদ্দিন ফিরোজ দাবি করেন, প্রগতিশীল জোট লংমার্চের নামে মূলত ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের নামে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে নেমেছে। এসময় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এমপি নিজাম হাজারীর ছবি সম্বলিত ফেস্টুনে লংমার্চে অংশগ্রহণকারীদের অশ্রাব্য মন্তব্য লিখায় ফেনীর জনসাধারণের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। একইসাথে ফেনী জেলা ছাত্রলীগ অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, প্রগতিশীলের ব্যানারে মূলত জামায়াত-শিবির চক্র ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদ জাবেদ হায়দার জর্জ দাবী করেন, ফেনীতে আজকে যে সংঘর্ষের খবর প্রচার হয়েছে তা লংমার্চকারীদের পূর্ব পরিকল্পিত ও রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের পায়তারা।

লংমার্চকারীদের উপর হামলায় ছাত্রলীগ জড়িত রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জর্জ বলেন, সকালে লংমার্চকারীরা নিজেরাই শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে বাক বিতন্ডায় লিপ্ত হয়েছেন। হামলার বিষয়টি তাদের পূর্ব পরিকল্পিত।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সম্পাদক জানান, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে ফেনী জেলা ছাত্রলীগ আলোক প্রজ্জ্বলন ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান করে আইন সংশোধন করায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, ছাত্রলীগ সবসময় নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি জিয়া উদ্দিন বাবলু, সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফ খান রায়হান, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর শুক্কুর মানিক, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত রাজু, সাধারণ সম্পাদক, সাহেদ আকবর অভি, ফেকসু সভাপতি তোফায়েল আহমেদ তপু, জিএস রবিউল হক রবিনসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বেলা সাড়ে ১২টায় কুরুচিপূর্ণ লেখনী ও ছবি অবমাননার প্রতিবাদে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

সকাল ১০টায় ফেনী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে সমাবেশ করে প্রগতিশীল জোট। এতে অংশ নেয় বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, নারী মুক্তি কেন্দ্র, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টসহ ফেনীর চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, উদীচী ফেনী জেলা সংসদ।

ফেনী হতে নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে রওনা হবার পথে বেলা সাড়ে ১১টায় শহরের কুমিল্লা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লংমার্চকারীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। বাসদের ফেনী জেলা সাধারণ সম্পাদক মহিবুল হক চৌধুরী রাসেল দাবি করেন, হামলায় ১২ জন আহত হয়েছে।