গেল বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের এসময়ে সবজির পাইকারি দর বেড়েছে তিনগুণ। মিষ্টি কুমড়া, বরবটি এমন সহজলভ্য সবজির দর বেড়েছে আরও বেশী। হতাশার বিষয় হলো, এমন পরিস্থিতি চলবে আরও একমাস। এসব তথ্য জানালেন শহরের দাউদপুর তরকারি আড়তের ব্যবসায়ী আবদুল মতিন পারভেজ।
অস্বাভাবিক বাজার দর প্রসঙ্গে এমএম ট্রেডিংয়ের মালিক পারভেজ জানান, সবজি উৎপাদনে ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মাগুরা এবং বগুড়া দেশের অন্যতম প্রধান জেলা। দীর্ঘদিনের বন্যায় এসব এলাকায় আবাদি জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বাজারে দেখা দিয়েছে কাঁচা পণ্যের সংকট। এতে করে দাম বাড়ছে হু হু করে।
বাজার ঘুরে দেখা যায় শসা এবং বরবটি এসেছে নোয়াখালীর সুবর্ণচর হতে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
আড়তদার আবুল কালাম জানান, বাগেরহাট হতে এসেছে মুলা, মিষ্টি কুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি। পারভেজ জানান, বুধবার ফুলকপির কেজি প্রতি পাইকারি দর ছিল ৫৫ টাকা এবং বাঁধাকপি ৩৫ টাকা। একইভাবে পেঁপে ২০ টাকা, শসা ৫৫ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
তবে খুচরা বাজারে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে আশংকাজনক হারে। বাজারে দেখা যায় কেজি প্রতি সিম ১৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২৪০ টাকা, টমেটো ১৩০ টাকা, বেগুন প্রকারভেদে ১০০ টাকা, ফুলকপি ৯০ টাকা, পেঁয়াজ ৯০ টাকা, আলু ৫৫ টাকা, পেঁপে ৪৫ টাকা, পটল ৭০ টাকা।
খুচরা বাজার দরের এমন চিত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রেতাদের তীব্র হতাশা প্রকাশ করতে দেখা গেছে। ফেনী শতাব্দী ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক মোঃ জাফর উদ্দিন লিখেছেন, মাসে ১৫-২০ হাজার টাকা ইনকাম করা পাঁচ জনের একটি মধ্যবিত্ত পরিবার এই উচ্চমূল্যের বাজারে কিভাবে সার্ভাইব করবে? বলুন তো! একইভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন বাজারে আসা নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষরা।
আলুর দাম খুচরা বাজারে এরই মধ্যে ৫০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা ছুঁইছুঁই। ব্যবসায়ী পারভেজ আলু ও পেঁয়াজের অসহনীয় দামের কারণ হিসেবে দেখছেন করোনাকালে অপরিকল্পিত খাদ্য সহায়তা। তিনি বলেন, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে চাহিদার অতিরিক্ত আলু ও পেঁয়াজ নিম্নআয়ের মানুষের কাছে সরবরাহ করা হয়েছে। এতে কোল্ড স্টোরেজে আলুর পরিমাণ কমে গেছে। চাহিদার অতিরিক্ত পণ্য মানুষ না খেয়ে নষ্ট করেছে।
নতুন আলু বাজারে আসবে আগামী নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি। তবে তা হবে অপরিপক্ক ও ছোট, ফলে খেতে সুস্বাদু হবে না বলে পারভেজ জানান। তিনি বলেন, বাজারের চাহিদা মেটাতে একমাস বয়সের গাছ উত্তোলন করে আলু সংগ্রহ করা হবে। সাধারণত আলু পরিপক্ক হতে একশো দিন সময় লাগে। তিনি জানান, আলুর বাজার পূর্বের পর্যায়ে আসতে ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।