ফেনী সদরের ছনুয়ায় রেহান উদ্দিন ভূঞা বাড়ির আশরাফুল ইসলামের ঘরে ডাকাতি ও বৃদ্ধার মৃত্যুর ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পাশাপাশি এ ঘটনায় জড়িত থাকায় ৪ ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।

গলার চেইন কেড়ে নেবার সময় এক ডাকাতের হাতে কামড়ে দিয়েছিল গৃহবধূ। সেই সূত্র ধরেই তদন্ত করে ঘটনায় জড়িত ওই ৪ ডাকাতকে গ্রেফতার ও ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ ওমর হায়দার।

তিনি জানান, বুধবার বিকালে এ মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামী পশ্চিম ছনুয়ার জসিম উদ্দিনের ছেলে মোঃ ওমর ফারুক (২২) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জাকির হোসেনের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছে। এতে সে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

জবানবন্দীতে ফারুক আদালতকে জানায়, আশরাফুল ইসলাম ঢাকায় চাকরি করে, তার ভাই প্রবাসী। বাড়ীতে কোন পুরুষ না থাকায় দরজার তালা ভেঙ্গে রাত আড়াইটার দিকে ডাকাতির উদ্দেশ্যে নুরনবী, দেলোয়ার, একরামসহ তারা চারজন ঘরে প্রবেশ করে। প্রথমে একরাম আশরাফুলের বৃদ্ধা মা সকিনা বেগমের কক্ষে প্রবেশ ওড়না দিয়ে তার হাত-মুখ বেঁধে ফেলে। পরে একরাম ও নবী আশরাফুলের স্ত্রী ইসরাত জাহান ফারজানার কক্ষে প্রবেশ করে গলার চেইন, মোবাইল ও কানের দুল কেড়ে নেয়। চেইন নেবার সময় ডাকাত দেলোয়ার হোসেনের হাতে কামড় দেয় ফারজানা। ফারুক ঘরে থাকা একটি প্লাস্টিকের ব্যাংক কেটে নগদ টাকা নেয়। এরপর তারা আশরাফুলের বড় ভাইয়ের স্ত্রী নুর নাহার রানীর কক্ষে প্রবেশ করে নগদ টাকা ও মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে একরাম ফারুককে ৮হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করে।

আরও পড়ুন>> ছনুয়ায় ডাকাতের হামলায় বৃদ্ধার মৃত্যু

ওমর হায়দার জানান, এ মামলায় গত ১৫ জুলাই পশ্চিম ছনুয়া বক্স আলী মিজি বাড়ীর সিদ্দিক আহমদের ছেলে একরামুল হক (৩৫)কে গ্রেফতার করে পুরিশ। তার দেয়া তথ্যমতে পরের দিন কাজিরদিঘী এলাকা থেকে তার ভাই দেলোয়ার হোসেন সুরুজ (৩২) কে গ্রেফতার করা হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভোরে একই এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোঃ ওমর ফারুককে গ্রেফতার করা হয়। নুর নবী (২৮) পশ্চিম ছনুয়ার সফি ডাক্তার বাড়ীর মোস্তফার ছেলে। তারা সকলে কারাগারে রয়েছে। এ ঘটনায় গত ৯ জুলাই আশরাফুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।

ফারুক পেশায় এক সিমেন্ট কোম্পানীর গাড়ী চালক। ফারুক, নুরনবী, একরাম ও দেলোয়ার দিনে কাজের শেষে সংঘবদ্ধভাবে রাতে ডাকাতি করত।

মামলার বাদী আশরাফুল জানান, গত ৯ জুলাই মধ্যরাতে ৪ জনের একটি ডাকাত দল বাড়িতে হানা দেয়। তারা ঘরে প্রবেশ করে আমার মা ও দুই গৃহবধুকে গামছা দিয়ে হাত পা বেঁধে ঘরের একটি কক্ষে আটকে রাখে। একপর্যায়ে আমার মা শৌরচিৎকার শুরু করলে ডাকাতরা তার উপর হামলা করলে তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান। পরে ডাকাতরা তার সাথে থাকা দুজনকে শ্লীলতাহানি করে ৪ ভরি স্বর্ণ, নগদ ১০ হাজার টাকাসহ প্রায় ৮ লাখ টাকার মালামাল লুট করে পালিয়ে যায়।