বাংলাদেশ সরকারের রেলমন্ত্রী ও পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশের সকল রেল রুট মিটার গেজের পরিবর্তে ব্রডগেজে রূপান্তর করতে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী চট্টগ্রাম হতে লাকসাম পর্যন্ত ব্রডগেজ লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সেই লাইন নির্মাণের দৃশ্যমানতা যাচাই করা হচ্ছে। আমরা আশা করি খুব অল্প দিনের মধ্যেই ডুয়ের গেজ লাইনের কাজ শুরু করতে পারবো। সেটি শেষ হলে আমরা মিটারগেজ এবং ব্রডগেজ দুই লাইনেই ট্রেন চালাতে পারব।

আজ রবিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম হতে ঢাকা যাবার প্রাক্কালে ফেনী রেলওয়ে স্টেশনে সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি কালে এ কথা জানান রেলমন্ত্রী।

ফুল দিয়ে রেলমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা

এর আগে রেলমন্ত্রী মোঃ নূরুল ইসলাম সুজনকে শুভেচ্ছা জানাতে ফেনী স্টেশনে জড়ো হন ফেনী-২ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান, পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরুন্নবীসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা।

এসময় রেলমন্ত্রীর কাছে ফেনীর মানুষদের জন্য ট্রেনের আসন ও টিকিটের সংখ্যা বৃদ্ধি, স্টেশনের আধুনিকায়ন, জেনারেটের স্থাপনসহ বিভিন্ন দাবী জানান নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপি।

তার দাবীর প্রেক্ষিতে রেলমন্ত্রী বলেন, লাকসাম থেকে আখাউড়া ডুয়েল গেজের কাজ চলমান রয়েছে। চট্টগ্রাম হতে লাকসাম পর্যন্ত ব্রডগেজ লাইন নির্মাণের প্রকল্প শুরু হলে ফেনী স্টেশন এইরকম নয়, আধুনিকভাবে সকল সুযোগ সুবিধা সম্পন্নভাবে রূপায়িত করা হবে, যাতে মানুষ একশ বছর ধরে মনে রাখে। তিনি বলেন, তখন আর জেনারেটরের প্রয়োজন হবে না।

টিকিট ও আসন সংখ্যা বৃদ্ধি দাবীর প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, টিকিটের সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব। আমি ঢাকা গিয়ে চেষ্টা করব কিভাবে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা যায়। মন্ত্রী বলেন, ফেনীর মানুষের ঢাকার চেয়ে চট্টগ্রামের সাথে যোগযোগ বেশি। ফেনী থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত আলাদা কোন ট্রেনের ব্যবস্থা করা যায় কিনা তাও দেখব। যদি সম্ভব হয় তাহলে হয় তা আমরা সেই ব্যবস্থাই করব।

সীমানা প্রাচীর নির্মাণের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় কাজ শুরু করেছি এবং স্টেশনগুলোকে একটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি যাতে টিকেট ছাড়া কোন যাত্রী প্ল্যাটফর্মে ঢুকতে না পারে। ঢাকা, কমলাপুর, জয়দেবপুর, বিমানবন্দর, নরসিংদী এ স্টেশনগুলোতে ইতোমধ্যে এক্সেস কন্ট্রোল শুরু হয়েছে। 

মন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে স্টেশনে অপেক্ষমান নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপি সহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা

জেনারেটরের দাবীর প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, যখন আধুনিক স্টেশন হয়ে যাবে তখন তো এগুলোর দরকারই পড়বেনা। তাও আপনারা যে অসুবিধার কথা বলেছেন আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে একটি বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপি জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন নেতা। তিনি দুই বারের নির্বাচিত সাংসদ। তার সাথে আমার ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে আমি নিজেকে ফেনীর নাগরিক হিসেবে মনে করি। আমি আসলে নিজেকে আলাদা করে ভাবিনা। তিনি বলেন, যদিও আমার বাড়ি পঞ্চগড়, তবুও আমরা আপনাদের চেয়ে পিছিয়ে আছি।

বিদায়ের প্রাক্কালে উপস্থিত সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

মন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে আরও উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বি.কম, স্টেশন মাষ্টার মোঃ মাহবুবুর রহমান, পৌর আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী ও সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল সহ প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ।

গতকাল শনিবার বাস্তবায়নাধীন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন রেলমন্ত্রী। রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে অবস্থান শেষে আজ সকালে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন মন্ত্রী। পথিমধ্যে লাকসাম ও আখাউড়া আরও কয়েকটি প্রকল্প পরিদর্শন করার কথা রয়েছে তার।