‘বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীন দেশ দিয়েছেন। আমরা তাকে কি দিয়েছি? যাদের তিনি বিশ্বাস করতেন এবং নিজের প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসতেন সেই বাঙালিরাই তাকে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যা করেছে। বাঙালি জাতির বঙ্গবন্ধুর এত আত্মত্যাগ, এই ঋণ কোন কালে শোধ হবেনা। তিনি আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ’

আজ শনিবার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবসে জেলা প্রশাসনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির এসব কথা বলেন ফেনী জেলা প্রশাসক মোঃওয়াহিদুজ্জামান।

সভায় ১৫ আগস্টের বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করে জেলা প্রশাসক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক বিদেশী এবং দেশীরা অনেক ষড়যন্ত্র করেছিল কিন্তু বঙ্গবন্ধু কখনোই বিশ্বাস করতেন না বাঙালীরা তাকে হত্যা করতে পারে।

তিনি বলেন, এই বেশী ভালোবাসতে গিয়ে সে দেশের জনগণের হাতে তাকে সপরিবারে নিহত হতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধু তার বাড়িতে কোন পাহারাদার রাখতেন না, এত বিশ্বাস করতেন বাঙালীকে। আর সেই বাঙালীরা তাকে হত্যা করেছে।

তিনি আরও বলেন, এক বিদেশী সাংবাদিককে দেয়া সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমার সবচেয়ে বড় যোগ্যতা হচ্ছে আমি আমার জনগণকে ভালোবাসি। নিজের অযোগ্যতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আমার সবচেয়ে বড় অযোগ্যতা হচ্ছে- আমি আমার জনগণকে অনেক বেশি ভালোবাসি।


১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকান্ডের কথা উল্লেখ করে মোঃ ওয়াহিদুজজামান বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে উনি রাজনীতি করতো, কিন্তু বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কি দোষ করেছিল, শিশু রাসেল কি দোষ করেছিল, কিন্তু তাদেরকেও হত্যা করা হয় সেদিন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর লাশ পর্যন্ত দাফন করা ছাড়া কবর দিয়ে দিতে চাইছিল কিন্তু একজন মানুষের অনুরোধে স্বল্প পরিসরে গোসল দিয়ে অল্প কয়েকজন নিয়ে জানাযা দিয়ে কবর দেওয়া হয়েছিল। আর বাকিদের তো দাফন ছাড়াই কবর দেওয়া হয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সুজন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বঙ্গবন্ধুর জীবন, সংগ্রাম, ত্যাগ ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম, ফেনী সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর বিমল কান্তি পাল, পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরন্নবী, বিপিএম, পিপিএম, জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মীর মোবারক হোসাইন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান বি.কম ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা হোসাইন।

আলোচনা সভা শেষে শোক দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পুরষ্কার প্রাপ্তদের হাতে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়। একই অনুষ্ঠানে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পক্ষ হতে উদ্যোক্তাদের মাঝে যুব ঋণ বিতরণ, প্রতিবন্ধী ও গরীবদের মাঝে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের অনুদান প্রদান করা হয়।

সভায় জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী, মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।