দিনের ব্যবধানে ফেনীতে নতুন করে আরও ২৯ জনের দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁিড়য়েছে ৪৯৫ জনে। আজ রবিবার (১৩ জুন) এ তথ্য নিশ্চিত করে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গতকাল নোয়াখালী আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ এ ফেনীর ৮৩ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৩০টি নমুনা পজিটিভ পাওয়া যায়, যার মধ্যে ১টি ২য় নমুনা। নতুন শনাক্তকৃতদের মধ্যে ফেনী সদরে ৫ জন, সোনাগাজীতে ১ জন, ফুলগাজী ১১ জন ও দাগনভূঁঞায় ১২ জন রয়েছে।

এ নিয়ে ১৭দিনে মোট ৩৭২জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।

এর আগে গতকাল শনিবার ফেনীতে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৫৫জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়।

সূত্র জানায়, নতুন শনাক্তকৃতদের মধ্যে ফেনী সদরে এক চিকিৎসক রয়েছেন। এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে পুলিশ সদস্য ও স্বাস্থ্যকর্মীও রয়েছেন।
ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এবিএম মোজাম্মেল হক জানান, ফুলগাজীর নতুন শনাক্তকৃত ১১ জনের মধ্যে ৮জন মুন্সিরহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা। এছাড়া আরও ২ পুলিশ সদস্য ও ১ জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে।

সূত্র জানায়, দাগনভূঞায় নতুন শনাক্তকৃত ১২জনের মধ্যে ৬জন একই পরিবারের সদস্য। তারা আজিজ ফাজিলপুর গ্রামের বাসিন্দা। ওই পরিবারের এক সদস্য করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। মৃত্যুর পর সংগৃহীত নমুনা পজিটিভ এসেছিল। এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে এক পুলিশ সদস্য ও স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। অপর চারজন পৌরসভা ও সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা।

অন্যদিকে সোনাগাজীতে নতুন করে আরও ১জন শনাক্তের কথা জানান উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ উৎপল দাশ।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত জেলায় মোট শনাক্তকৃত রোগীদের মধ্যে সদরে সর্বোচ্চ সংখ্যক শনাক্ত হয়েছে ১৭৯জন। শনাক্তকৃত সংখ্যার ভিত্তিতে জেলায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দাগনভুঞা উপজেলায়। উপজেলায় এ পর্যন্ত মোট ১২০ জন শনাক্ত হয়েছে। এরপরে রয়েছে সোনাগাজীতে ৮১জন, ছাগলনাইয়ায় ৬২জন, পরশুরামে ২৪জন ও ফুলগাজীতে ২০জন। এছাড়া আরও ৮জন রয়েছেন ফেনী জেলার বাইরের বাসিন্দা, ফেনীতে তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, বর্তমানে ১১ জন করোনা রোগী ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। অন্যরা স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনে হোম আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ১০জনকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছে। করোনায় এখন পর্যন্ত জেলায় ১০ জন মারা গেছেন। আজ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১১২জন।

সূত্র আরও জানায়, এ পর্যন্ত সংগৃহীত মোট ৩ হাজার ৬২৫টি নমুনার মধ্যে মধ্যে ২৭৭১টি নমুনার ফল পাওয়া গেছে। আজ নতুন করে পরীক্ষার জন্য আরও ২১৪টি নমুনা প্রেরণ করা হয়েছে। ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছে ৮৫৪টি নমুনা।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ ৮৩টি নমুনার মধ্যে নতুন ২৯টি , গতকাল ১৫৯টি নমুনার মধ্যে ৫৫টি, ১২জুন ১৪৯টি নুমনার মধ্যে ৪১টি, ১১ জুন ২৫টি, ১০জুন ১৫১টি নুমনার মধ্যে ২৭টি, ৯জুন ৭টি, ৮জুন ৪৯টি, ৭ জুন ১৬টি নমুনা পজিটিভ এসেছে।

১৬ এপ্রিল জেলার ছাগলাইনাইয়া উপজেলায় এক যুবকের শরীরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। মাঝখানে আক্রান্তের হার সীমিত থাকলেও মে তে এসে তা লাফিয়ে লাফিয়ে ক্রমশ বাড়তে শুরু করে। জুনে এসে তা দ্বিগুন হারে বাড়তে শুরু করেছে।