দিনের ব্যবধানে ফেনীতে নতুন করে আরও ৩২ জনের দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে ফেনী ১৩২জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। আর জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২২৫জনে। আজ শুক্রবার (৫ জুন) সকালে এ তথ্য জানান জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন।


তিনি জানান, নতুন শনাক্তকৃতদের মধ্যে ১১জন ফেনী সদরের, ১৯জন দাগনভূঞার, ১জন সোনাগাজীর ও ১ জন ফুলগাজীর বাসিন্দা। তাদের মধ্যে ১৮ জন পুরুষ ও ১৪ জন নারী। এদের বয়স ৮ থেকে ৬৮ বছরের মধ্যে। এছাড়া আক্রান্তদের মোট সুস্থ হয়েছেন ৬৩ জন। আর এ পর্যন্ত মারা গেছে ৪ জন।


দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রুবাইয়েত বিন করিম জানান, নতুন শনাক্তকৃতদের মধ্যে পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়নের বৈরাগীর বাজার এলাকায় ১২জন, পৌর এলাকায় ৪জন, ইয়াকুবপুরে ইউনিয়নে ২জন এবং জায়লস্কর ইউনিয়নে ১জন রয়েছেন। এ নিয়ে উপজেলায় মোট ৭৬জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হল। আর ১০জন সুস্থ হয়েছেন।


সূত্র জানায়, দাগনভূঞায় শনাক্তকৃতদের মধ্যে এক পৌর কাউন্সিলরসহ একই পরিবারের ১২জন সদস্য রয়েছে। এর আগে ওই পরিবারের আরও ৬জন আক্রান্ত হয়ে হোম আইসোলেশনে আছেন।


অন্যদিকে ফেনী সদরে নতুন করে আরও ১১জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।


ফুলগাজীতে আরও একজন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির (৩৫) বাড়ি উপজেলার জিএমহাট ইউনিয়নের বশিকপুর গ্রামে। এ নিয়ে উপজেলায় গত দুইমাসে এক নারীসহ আটজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।


এছাড়া সোনাগাজীতে নতুন করে এক স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।


স্বাস্থ্য বিভাগ প্রদত্ত তথ্যমতে, ফেনীতে ২৯ মে শুক্রবার ফেনীতে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৪৭ জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়। আর আজ শুক্রবার (৫জুন) একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩২জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।


সূত্র জানায়, আক্রান্তদের মাঝে রয়েছেন শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধসহ স্বাস্থ্যকর্মী, সরকারী কর্মকর্তা, ট্রাফিক পুলিশ, ব্যাংক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, শিক্ষকসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ।


স্বাস্থ্য বিভাগের প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী, এ পর্যন্ত জেলায় মোট শনাক্তকৃত রোগীদের মধ্যে সদরে সর্বোচ্চ সংখ্যক রয়েছে ৮২জন। শনাক্তকৃত সংখ্যার ভিত্তিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দাগনভুঞা উপজেলায়। এ উপজেলায় এ পর্যন্ত মোট ৭৬জন শনাক্ত হয়েছে। এরপরে রয়েছে সোনাগাজীতে ২২জন, ছাগলনাইয়ায় ২৪জন, পরশুরামে ৭জন, ফুলগাজীতে ৮জন। এছাড়া আরও ৫জন রয়েছেন ফেনী জেলার বাইরের বাসিন্দা, ফেনীতে তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল।


জেলা করোনা নিয়ন্ত্রণকক্ষের সমন্বয়ক ডা. শরফুদ্দিন মাহমুদ জানান, আক্রান্তদের মধ্যে ৬৩ জন সুস্থ হয়েছেন। এদের মধ্যে সদরে ২১ জন, সোনাগাজীতে ৮ জন, ছাগলনাইয়ায় ১৩ জন, দাগনভূঞায় ১০ জন, পরশুরামে ৭ জন ও ফুলগাজীতে ৪ জন রয়েছেন। আর করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪জন।


সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত ফেনীতে মোট ২ হাজার ১শ ৯৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তার মধ্যে ১ হাজার ৭শ ৫৯টি নমুনার প্রতিবেদন পাওয়া গেছে।


গত ১৬ এপ্রিল জেলার ছাগলাইনাইয়া উপজেলায় এক যুবকের শরীরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। মাঝখানে আক্রান্তের হার সীমিত থাকলেও মে তে এসে তা লাফিয়ে লাফিয়ে ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে। এর আগে ১৬ এপ্রিল হতে ৯ মে পর্যন্ত ফেনীতে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা সীমাবদ্ধ ছিল ৭ জনে।