দিনের ব্যবধানে ফেনীতে করোনা রোগী আরও ১৬জন বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন। সোমবার রাতে (১ জুন) রাতে তিনি জানান, নতুন শনাক্তকৃত ১৬জনের মধ্যে ১৫জনই দাগনভূঞা উপজেলার। আর একজন ফেনী সদরের বাসিন্দা।


সোমবার (১ জুন) নোয়াখালীর আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ফেনীর ৭২টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৬টি পজিটিভ এসেছে। তাদের মধ্যে ১৪জন পুরুষ, আর দুজন নারী। বয়স ১৪ হতে ৫৫ এর মধ্যে বলে জানান সিভিল সার্জন কার্যালয়ের করোনা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সমন্বয়ক ডাঃ শরফুদ্দিন মাহমুদ।


এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৭৫জনে। আর দাগনভূঞা উপজেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ালো ৫২জনে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রুবাইয়েত বিন করিম জানান, নুতন শনাক্তকৃতদের মধ্যে পৌরসভায় রয়েছেন ৭জন, ইয়াকুবপুরে ৪জন, রামনগরে ১ ও পূর্বচন্দ্রপুরে ৩জন।


সূত্র জানিয়েছে, দাগনভূঞা নতুন শনাক্তকৃতদের মধ্যে রয়েছেন এক স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও তার স্ত্রী, এক প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ও তার স্ত্রী, একজন সাবেক কমিশনার। তারা সকলেই স্থানীয়। তারা কি করে সংক্রমিত হলেন তা বলা যাচেছ না। 


এছাড়া ফেনী সদরে নতুন করে আরও এক ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি বর্তমানে ঢাকা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।


সূত্র আরও জানায়, স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগ সভাপতি দিদারুল কবির রতনের ২য় দফা নমুনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছে। গত বৃহস্পতিবার করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন দিদারুল কবির রতন।


দিদারুল কবির রতন জানান, তিনি সুস্থ আছেন। তার কোন শারীরিক সমস্যা হচ্ছে না।


গত ২৯ এপ্রিল দাগনভূঞায় এক নারীর শরীরে প্রথম করোনা শনাক্ত করা হয়। উপজেলায় আক্রান্তের তালিকায় রয়েছেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশ সদস্যসহ নানা বয়সী মানুষ। এরমধ্যে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোখসানা সিদ্দিকী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ ৩পুলিশ সদস্য সুস্থ হয়েছেন।


উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানান, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের সব কয়টিতেই করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। মোট শনাক্তকৃত রোগীদের মধ্যে পৌরসভায় ১৯জন, রাজাপুরে ১১জন, সিন্দুরপুরে ২জন, পূর্বচন্দ্রপুরে ৬জন, রামনগর, ইয়াকুবপুরে ৬জন, দাগনভূঞা সদর ইউনিয়নে ২জন, মাতুভূঞা ১জন, জায়লস্করে ৩জন, রামনগরে ১জন রয়েছে। এছাড়া উপজেলার বাইরে বাসিন্দা একজনের নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ এসেছে। আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত উপজেলায় মোট ৮জন সুস্থ হয়েছেন।


ডাঃ শরফুদ্দিন মাহমুদ জানান, সোমবার পর্যন্ত ফেনীতে মোট ১৭৮৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে ১৫৩৫টির ফলাফল পাওয়া গেছে।


জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী, আক্রান্তের সংখ্যার ভিত্তিতে শীর্ষে রয়েছে ফেনী সদর। এ উপজেলায় এ পর্যন্ত মোট শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা ৬২জন। এরপরের অবস্থানে রয়েছে দাগনভূঞা। এছাড়া ছাগলনাইয়ায় ২১জন, সোনাগাজীতে ২১জন, পরশুরামে ৭জন ও ফুলগাজীতে ৭জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর বাইরে আরও ৫জন রয়েছেন ফেনী জেলার বাইরের বাসিন্দা। এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে জেলায় মোট ৫৯ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। আর ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।


পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত শুক্রবার (২৯ মে) হতে গতকাল সোমবার (১ জুন) পর্যন্ত ৪দিনে ফেনীতে মোট ৮৬জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়। এরমধ্যে শুক্রবার রেকর্ড সংখ্যক ৪৭জন শনাক্ত করা হয়েছিল।


গত ১৬ এপ্রিল জেলার ছাগলাইনাইয়া উপজেলায় এক যুবকের শরীরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। মাঝখানে আক্রান্তের হার সীমিত থাকলেও মে তে এসে তা লাফিয়ে বেড়েই চলেছে। গত ১৬ মে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক ৩১জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়।