করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কর্মহীণ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তায় ফেনীতে এ পর্যন্ত (৩১ মে) সরকারি সহায়তা এসেছে ২ হাজার ৫৪৮ টন চাল ও ১ কোটি ৪৬ লাখ ৯৮ হাজার ৬৬৪ টাকা। এরমধ্যে ২৯ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে শিশুখাদ্যের জন্য। জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান বলেন, অসহায় মানুষের খাদ্য সহায়তায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার অব্যাহত রয়েছে।


জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জানান, জেলায় ৯৫ হাজার ৩৪৭ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়ার প্রাথমিক তালিকা থাকলেও এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৪৭ হাজার ৩৫৩ পরিবার খাদ্য সহায়তা পেয়েছে। তবে এ সংখ্যার মধ্যে এক পরিবারকে একাধিকবার সহায়তা দেয়ার সংখ্যা যোগ হয়েছে। এতে চলবে তাদের পরিবার। সূত্র জানায়, শিশুখাদ্যের মধ্যে রয়েছে সুজি, চিনি, সেমাই, মুড়ি, খজুর, বিস্কুট কেক, চকলেট, গুড়োদুধ ও সাবান।


জেলা প্রশাসক বলেন, ফেনী ছোট একটি জেলা এখানে যে পরিমাণ ত্রাণ এসেছে এতে একজন মানুষও না খেয়ে থাকার কোন সম্ভাবনা নেই। আমরা শুধু অনুরোধ করছি, যারা সরকারি সহায়তা পেয়েছেন তারা অন্যকে সুযোগ করে দেন। এ খাদ্যসহায়তা প্রয়োজন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।


জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত ছয় উপজেলায় ২ হাজার ২২০টন চাল, ১ কোটি ৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ও ২৪ লাখ টাকার প্যাকেটকৃত শিশুখাদ্য উপ-বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৫৭৪ টন চাল ও শিশুখাদ্য ১ হাজার ৩৮০ প্যাকেট । ফেনী পৌরসভায় ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ১৭০ টন চাল। সোনাগাজীতে ১৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ৪১৩ টন চাল ও ৬৭০ প্যাকেট শিশুখাদ্য। দাগনভূঞায় ১৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা, ৩৫৮ টন চাল ও ৬৭০ প্যাকেট শিশুখাদ্য। ছাগলনাইয়ায় ১৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকা, ২৯৫ টন চাল ও শিশুখাদ্য ৪৮০ প্যাকেট। ফুলগাজীতে ১১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, ২৩৫ টন চাল ও ৪৬০ প্যাকেট শিশুখাদ্য এবং পরশুরামে ৯ লাখ ৫ হাজার টাকা, ২৯৫ টন চাল ও ৪৪০ প্যাকেট শিশুখাদ্য।


একই সূত্র জানায়, উপজেলাভিত্তিক এ পর্যন্ত সহায়তাপ্রাপ্ত পরিবারের সংখ্যা সদর উপজেলায় ৫০ হাজার ৩০০ পরিবার, সোনাগাজীতে ৫৮ হাজার ৫৮৩ পরিবার, দাগনভূঞায় ৪৩ হাজার ২৪০ পরিবার, ছাগলনাইয়ায় ২৪ হাজার ৭২০ পরিবার, ফুলগাজীতে ৩৩ হাজার ২০০ পরিবার এবং পরশুরামে ১৯ হাজার পরিবার।


জেলা প্রশাসক বলেন, ছয় উপজেলায় চাহিদার ভিত্তিতে প্রদান করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে তালিকাভূক্তদের বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। সহায়তা নিশ্চিত করতে তালিকায় যোগ হচ্ছে আরও মানুষ। যোগ হচ্ছে মধ্যবিত্ত।


তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সহায়তা বন্টনের ক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় করেই করা হচ্ছে প্রত্যেক ক্ষেত্রে তালিকা করা হচ্ছে। সে তালিকা অনুযায়ী খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে প্রথম ধাপের সবার একবার পাওয়ার পর আবার দ্বিতীয় পর্যায়ে ব্যক্তি আবার পাবেন।


জেলা প্রশাসক জানান, ত্রাণকার্য যাতে কোনোরকম অনিয়ম না ঘটে এবং সুষ্ঠভাবে চলে সেজন্য দশটি মনিটরিং টিম করা হয়েছে সে ক্ষেত্রে এ দশটি টিম পুরো জেলার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।


দিনমজুর, নির্মাণ শ্রমিক, সিএনজিচালক, পরিবহন শ্রমিক, প্রতিবন্ধী, হিজড়া, বেদে সম্প্রদায়সহ জেলার সর্বত্র অসহায় মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।