ফেনীতে ৩৬ ঘন্টার ব্যবধানে নতুন করে আরও ৮জনের দেহে কোভিড-১৯ সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৮১ তে। আজ বুধবার (২৭ মে) সকালে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নতুন করে আরও ৪জন শনাক্তের কথা জানায়। এর আগে মঙ্গলবার ( ২৬ মে) ৪ জন শনাক্ত করা হয়।

স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১৬ এপ্রিল জেলার ছাগলাইনাইয়া উপজেলায় এক যুবকের শরীরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। মাঝখানে আক্রান্তের হার সীমিত থাকলেও মে তে এসে তা লাফিয়ে কয়েকগুন হয়ে গেছে। গত ৯মে হতে ২৭ মে পর্যন্ত ফেনীতে ৭৪ জনের দেহে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে গত ১৬ মে সর্বোচ্চ সংখ্যক শনাক্ত হয়েছে ৩১জন। এর আগে ১৬ এপ্রিল হতে ৯ মে পর্যন্ত ফেনীতে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা সীমাবদ্ধ ছিল ৭ জনে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মে হতে জুনের মধ্যে দেশে সংক্রমণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে। ফেনীতে মে মাসের শনাক্তের সংখ্যার হার দেখে সেটি অনুমান করা যাচ্ছে। এছাড়া সারাদেশে শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন উর্ধ্বগতিতে। সেই সাথে বাড়ছেও মৃত্যুর সংখ্যা।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের করোনা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সমন্বয়ক ডাঃ শরফুদ্দিন মাহমুদ জানান, নতুন আক্রান্তরা সবাই পুরুষ। তাদের বয়স ২৫ হতে ৭০ বছরের মধ্যে। নতুন শনাক্তদের মধ্যে ৪জনই ফেনী সদরের। এছাড়া ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও সোনাগাজীতে নতুন করে ১জন করে শনাক্ত হয়েছে। বাকী একজনের চট্টগ্রামের বাসিন্দা। ফেনীতে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। নোয়াখালীর আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় তাদের করোনা পজিটিভ এসেছে।


স্বাস্থ্য বিভাগের একটি সূত্র জানায়, নতুন শনাক্তদের মধ্যে ৪জনই ফেনী শহরের মধ্যে। এদের মধ্যে ২জন ডাক্তার পাড়ায়, একজন উকিলপাড়ায় বসবাস করেন। আর একজন চট্টগ্রামের বাসিন্দা। ঈদের আগের দিন ফেনী বেড়াতে এসেছিলেন। ফেনী জেনারেল হাসপাতালে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন জেলা যুবলীগের এক নেতা, এক পুলিশ সদস্য ও এক বীমকর্মী। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে ফেনী সদর।


অন্যদিকে ফুলগাজীর আনন্দপুরে ১ জন, ছাগলনাইয়ার শুভপুরে ও সোনাগাজীতে নতুন করে ১জন করে শনাক্ত হয়েছে।


সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, মোট শনাক্তকৃতদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৩৭ জন সুস্থ হয়েছেন। গতকাল পর্যন্ত ফেনীতে সংগৃহীত মোট ১ হাজার ২শ ৭১ টি নমুনার মধ্যে ১ হাজার ১শ ৬ টি ফলাফল পাওয়া গেছে। আর মারা গেছেন ২জন।


জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৭ জন, ছাগলনাইয়ায় ১৪ জন, দাগনভুঞার ১৪ জন, সোনাগাজীতে ১০ জন, পরশুরামে ৭ জন, ফুলগাজীতে ৫ জন। অপর চারজন পাশ্ববর্তী চট্টগ্রাম, মিরসরাই্, চৌদ্দগ্রাম ও সেনবাগের বাসিন্দা ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করে আক্রান্ত হয়েছেন। একজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রেরণ করা হয়েছে।


আক্রান্তদের মধ্যে জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, নারী, পুরুষ, শিশুসহ সব বয়সী মানুষ রয়েছে।