আলেয়া বেগম। ৫৫ বছরের সহায় সম্বলহীন মানসিক প্রতিবন্ধী এক মহিলা। গত তিনমাস ধরে বিলোনিয়া স্মৃতিস্তম্ভের রাস্তার ধারেই খোলা ঝুপড়িতে কোনমতে বসবাস করে করে আসছিলেন তিনি। কেউ কিছু দিলে তার খাওয়া জোটে, নাহয় উপোস থাকতে হয় তাকে। ঝড়বৃষ্টিতে নেই তার মাথা গোঁজার ঠাঁই। মাটিতে শুয়ে দিন কাটাতে হয় তার। এমনকি মাথায় দেবার মত বালিশটুকুও নেই। আত্মীয় পরিবার পরিজন।


আর এ খবর পেয়ে দেরী করেনি পরশুরাম উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাদের সহানুভূতি আর ভালোবাসায় এ দুর্দশা কিছুটা লাঘব হয়েছে বৃদ্ধা আলেয়া বেগমের। মিলেছে তার আশ্রয়ের ঠাঁই, মিলেছে বালিশ, কাপড় ও কম্বল। গতকাল (৫ এপ্রিল) ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিজ হাতে ঠিক করে দিয়েছেন তার আশ্রয়ের ব্যবস্থাটুকু।


উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক জমির উদ্দিন ভাবন বলেন, গত শনিবার (৪ এপ্রিল) পৌর ১নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের কর্মী ও স্থানীয় ক্যাম্পের বিজিবি সদস্য রুবেল ও জুবায়ের ভাই ফোন দিয়ে আমাকে ওনার সম্পর্কে জানান। খবর পেয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক হাবিবুর রহমান সাকিবসহ গিয়ে সেখানে যাই আমরা। গিয়ে দেখি কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ভিজে নাজুক অবস্থা তার। পড়নে বেশ পুরোনো ময়লাযুক্ত কাপড়। তখন তাৎক্ষণিকভাবে একটি কাপড়, বালিশ ও একটি কম্বল ব্যবস্থা করে দেই আমরা।


তিনি বলেন, এসময় যুগ্ম-আহবায়ক হাবিবুর রহমান সাকিবসহ উপস্থিত ছাত্রলীগের আকাশ মিটু, রাকিব, ওমর জামাল, বিজয়, হৃদয়, অন্তর ও শরিফসহ সবাইকে তার আশ্রয়ের জন্য বাসস্থানটি ঠিক করে দিতে বলি। গতকাল রবিবার সকালে তারা সেটি মেরামত করে আলেয়া বেগমের থাকার ব্যবস্থা করে দেয়।


ভাবন বলেন, বর্তমান চলমান দূর্যোগ পরিস্থিতিতেও ছাত্রলীগ কর্মীদের এমন মানবিক কাজে অংশগ্রহণ সত্যিই আনন্দদায়ক। তিনি বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন আলেয়ার জন্য দ্রুত স্থায়ী আবাসের জন্য চেষ্টা করছি আমরা।


আলেয়া বেগমের ভাষ্যমতে তিনি নওগাঁ জেলার যাত্রাপুর গ্রামের বাসিন্দা। এ ছাড়া তার স্মৃতিতে আর কিছুই নেই।


আর এ খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে প্রকাশ হলে ছাত্রলীগের এ কার্যক্রম প্রশংসিত হচ্ছে উপজেলার সর্ব মহলে। নুর করিম জাভেদ নামে এক ফেইসবুকার লিখেন, পরশুরাম উপজেলা ছাত্রলীগ মানবিক রাজনীতির জন্য দৃষ্টান্ত।


তার সহযোগিতায় এগিয়ে আসছেন অন্যান্যরাও। জনতা ব্যাংকের মুন্সিরহাট শাখার ব্যবস্থাপক ওয়ারিশ মজুমদার ভাবনকে উদ্দেশ্য করে মন্তব্য করেন, নার কোন সহযোগিতা করার প্রয়োজন হলে ইনবক্সে জানিয়ো। যতটুকু আল্লাহ্ তওফিকে রাখছে চেষ্টা করবো।